কলকাতা প্রতিনিধি
চার উপ-নির্বাচনেই সবুজ ঝড়। তাতে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল বিরোধী শিবির। বেশ কয়েকটি জায়গায় তাঁদের জমানতও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ভোট গণনা শুরু হয় চারটি উপ-নির্বাচন কেন্দ্রে। কোচবিহারের দিনহাটা, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা এবং নদিয়ার শান্তিপুরে জয়জয়কার শুরু হয় তৃণমূলের। প্রথম রাউন্ডের পর থেকেই জয় নিয়ে কোনও সন্দেহ ছিল না জোড়াফুল প্রার্থীদের। এরপর বেলা যতই গড়িয়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভোটের মার্জিন। খড়দহের বিজয়ী প্রার্থী তথা রাজ্যের প্রবীণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রায় লক্ষাধিক ভোটের (৯৩ হাজার ৮৩২) ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন তিনি। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন ২০ হাজার ২৫৪টি ভোট। একই চিত্র কোচবিহারের দিনহাটাতেও। সেখানে দেড় লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের উদয়ন গুহ। রেকর্ড ব্যবধানে জিতে কার্যত গতবারের ৫৭ ভোটে হারের জবাব দিলেন তিনি। এর ফলে ধুলিসাৎ হয়ে গেল নিশীথ গড়। এমনকী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বুথেই লজ্জাজনকর হার হল বিজেপির। জমানত জব্দ হয়েছে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী অশোক মণ্ডল এবং ফব প্রার্থী আবদুর রউফের। এবার উদয়ন গুহ পেয়েছেন ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৮টি ভোট। অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ২৫ হাজার ৪৮৬ ভোট। শান্তিপুর উপ-নির্বাচনেও জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী। ১৭ রাউন্ড গণনা শেষে ৬৪, ৬৭৫ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন তিনি। গোসাবাতেও প্রায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজারের ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল। এদিন ফলাফল ঘোষণার পরই টুইট করে জয়ী প্রার্থীদের শুভেচ্ছা জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, এটা মানুষের জয়। উন্নয়নের পক্ষেই ভোট দিয়েছে মানুষ। এই জয় দেখাল বাংলার মানুষ অপপ্রচার এবং ঘৃণার রাজনীতির পরিবর্তে উন্নয়ন ও ঐক্যকে বেছে নিলেন। জনগণের আশীর্বাদে আমরা বাংলাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। পাশাপাশি, জয়ের পরই এদিন নাম না করে বিজেপিকে কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, এই জয় প্রকৃত অর্থেই শব্দবাজিহীন দীপাবলি। বিজেপির নেতা-কর্মীদের জানাই শুভ দীপাবলি। অন্যদিকে, এদিন বিপুল ভোটে জয়ের পরও দলীয় কর্মীদের বিজয় মিছিল থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তিনি। স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন কোথাও কোনও বিজয় উৎসব হবে না। অন্যদিকে, আজ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে ফোন করেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। জানান, ভোটে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে খুশি তিনি। তবে ফল ঘোষণার পর যেন কোনওরকম বিজয় উৎসব না হয়। আজ সকালে ফোন করে সেই নির্দেশই দিয়েছিলেন তিনি।