আইন আদালত চট্টগ্রাম

ঋণখেলাপি মামলায় শিল্পপতি ফেরদৌস খান আলমগীর গ্রেপ্তার

 

চট্টগ্রাম ব্যুরো

সিটি ব্যাংকের করা মামলায় ঋণখেলাপি ও চট্টগ্রামভিত্তিক বাগদাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডি ফেরদৌস খান আলমগীরকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।

গতকাল বুধবার (৩ নভেম্বর) সকালে নগরের লালদিঘী এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন। চট্টগ্রামে অর্থঋণ আদালতের বিশেষ নির্দেশনা পাওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, সিটি ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখা থেকে ১৭ কোটি ৩ হাজার টাকা ঋণ নেন এমডি ফেরদৌস খান আলমগীর। এ টাকা আদায়ে ২০১২ সালে অর্থঋণ আদালতে মামলা দায়ের করে ব্যাংকটি। যা বর্তমানে সুদে আসলে ৩১ কোটি ২৫ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এ মামলায় ফেরদৌস খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ১০টির বেশি মামলায় পরোয়ানা জারি রয়েছে।

সোমবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান জেলার শীর্ষ ঋণ খেলাপীদের গ্রেপ্তারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে বিশেষ নির্দেশ প্রদান করেন। চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের তথ্যমতে, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত দশ মাসে আদালত ১ হাজার ৩৭৩ টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

পাওনাদার ব্যাংকগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগদাদ গ্রুপের কাছে বিভিন্ন ব্যাংকের বর্তমানে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা আটকে রয়েছে। এরমধ্যে ইসলামী ব্যাংকের ৫০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংকের ৪৬ কোটি টাকা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৩১ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়ার ১২ কোটি টাকা, ইস্টার্ন ব্যাংকের  ৯ কোটি ৮৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, সোশাল ইসলামী ব্যাংকের ১১ কোটি টাকাসহ আরো কয়েকটি ব্যাংকের পাওনা আটকে আছে।

বাগদাদ গ্রুপের কর্ণধার চট্টগ্রামের রাউজানের ফেরদৌস খান আলমগীর। তার প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মেসার্স আলমগীর ব্রাদার্স, বাগদাদ ট্রেডিং, ফেরদৌস এন্টারপ্রাইজ, বাগদাদ এক্সিম করপোরেশন, বাগদাদ পরিবহন, বাগদাদ প্রপার্টিজ। এরপর ব্যাংকগুলো থেকে একের পর এক ঋণ সুবিধা নেন। প্রথম দিকে ব্যাংকগুলোর সাথে ভালো ডিলিং করলেও পরে এসে ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে গড়িমসি শুরু করে। এক পর্যায়ে ব্যাংকগুলোর ঋণগুলো আটকে যায়।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক প্রবর্তক শাখার ম্যানেজার মো. ওসমান গণি বলেন, ‍”বাগদাদ গ্রুপের মালিক আমাদের খেলাপি গ্রাহক। আর তার খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩৪ কোটি  টাকা। আর এ পাওনা আদায়ে ঋণের বিপরীতে বন্ধকিতে থাকা জমি নিলামে বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।”

ফেরদৌস খান আলমগীর ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পরিচালক ছিলেন। তাছাড়া সাউদান ইউনিভার্সিটির পরিচালক তিনি।

দুই বছর আগে গ্রেপ্তার হন ফেরদৌস খানের স্ত্রী মেহেরুন

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান বাগদাদ গ্রুপের কর্ণধার ফেরদৌস খান আলমগীরের স্ত্রী মেহেরুন নেছার (৫০)। তার বিরুদ্ধেও খেলাপি ঋণের ১৫ টি মামলা রয়েছে। বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফিনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেক প্রতারণার নয় মামলায় সাজাও হয়েছে তার।

২০১৯ সালের আগস্টে কানাডা থেকে দেশে ফিরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন মেহেরুন। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন

 

Related Posts