সিনিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়লেন ফটিকছড়ির মেয়ে শাহানা হানিফ। এ কাউন্সিলের প্রথম দক্ষিণ এশীয় এবং প্রথম মুসলমান নারীও তিনি। গত মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) নিউইয়র্ক সিটিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে তার নির্বাচনী এলাকা ব্রুকলিনের ডিস্ট্রিক্ট-৩৯ থেকে ৮৯.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন শাহানা হানিফ। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ দলের প্রার্থী ব্রেট ওয়েনকফ পেয়েছেন মাত্র ৮ শতাংশ ভোট। শাহানা হানিফ যুক্তরাষ্ট্রের চট্টগ্রাম সমিতির সাবেক সভাপতি ও ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হানিফের কন্যা, তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টাও। শাহানার মা রেহেনা হানিফ। গ্রামের বাড়ি পূর্ব ফরহাদাবাদে।
উৎফুল্ল শাহানা হানিফ ব্রুকলিনে নিজের নির্বাচনী এলাকার বিজয় মঞ্চে দেয়া বক্তব্যে বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা ইতোমধ্যে বর্ণ-বিদ্বেষমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মোর্চা গঠন করেছি, ধর্ম এবং জাতিগত সমপ্রীতির বন্ধনকে সুসংহত করার পথে রয়েছি। আমরা তেমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে চাই যেখানে সকলেই নিরাপদে পথ চলতে সক্ষম হবে। শিক্ষায় থাকবে না কোনো বৈষম্য। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সিটি কাউন্সিলের নতুন এই সদস্য বলেন, ভয়ঙ্কর যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা দূর করতে সক্ষম হবো সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায়। আমরা এমন একটি সিটি গড়তে চাই যেখানে অভিবাসীরাও নিজের নিরাপদ আবাস ভূমি ভাবতে সক্ষম হবেন। নির্বাচন শেষ হয়েছে বলে নীরব হয়ে থাকলে চলবে না। সকলকে সজাগ ও সরব থাকতে হবে নিজ নিজ অধিকারের প্রশ্নে।
নির্বাচনে তাঁর প্রতি সমর্থন জানানোয় জনসমাজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। সমর্থন দিয়ে পাশে থাকার জন্য তিনি বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীদের বিভিন্ন কাজে আরও বেশি করে এগিয়ে যাওয়াকে বেগবান করতে চান শাহানা হানিফ।
ব্রুকলিনের মিশ্র জনগোষ্ঠীর এলাকায় শাহানা হানিফ কর্মজীবীসহ সর্বস্তরের লোকজনের ব্যাপক সমর্থন পেয়েছেন। তরুণ বয়স থেকেই একজন নাগরিক সংগঠক হিসেবে শাহানা হানিফ পরিচিত হয়ে উঠেন নিজের নির্বাচনী এলাকায়। বিভিন্ন নাগরিক দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের মাঠে তাকে দেখা গেছে সব সময়। একজন অভিবাসী পরিবারের নারী হিসেবে লক্ষ্য স্থির করে শাহানা হানিফ তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন। শাহানার এ বিজয়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের নতুন দ্বার উম্মোচন হয়েছে। ভবিষ্যতের ইতিহাস শাহানা হানিফকে ইতিহাস সৃষ্টির অনুঘটক হিসেবে মনে রাখবেন বলে মনে করেন তিনি । নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, একজন মুসলিম নারী হিসেবে প্রথমবারের মতো নিউ ইয়র্কের কাউন্সিল উইম্যান হয়ে ইতিহাস গড়লেন শাহানা হানিফ।
নির্বাচনে যারা কাজ করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে এক বিবৃতিতে শাহানা বলেছেন, আমি খুবই খুশি এবং গর্বিত নিউ ইয়র্ক সিটির পাঁচশ বছরের বেশি সময়ের ইতিহাসে প্রথম মুসলমান সদস্য হিসেবে এবং ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ এ প্রথম নারী হিসেবে জয়ী হতে পেরে।