চট্টগ্রাম বিশেষ

জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে প্রভাব পড়েছে দ্রব্যমূল্য ও পরিবহন বাড়ায় ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ

এস.এম.মাঈন উদ্দীন রুবেল

এ যেন এক মরার উপর খড়ার গাঁ,দেশে লাগামহীন দ্রব্যেমূল্যের উর্ধ্বগতির পাশাপাশি হুট করে অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় জ্বালানি তেলের মূল্য। কেরোসিন ও ডিজেলে লিটার প্রতি বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। যা একদিকে পরিবহন ভাড়া বাড়াতে শুরু করেছে অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য সরবরাহকারী যানবাহনের উপর প্রভাব ফেলেছে এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যূমূল্যের দাম আরো চড়া হতে শুরু করেছে। এদিকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধিতে পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে পরিবহন শ্রমিক মালিক সমিতি।

জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের ডাকা ধর্মঘটে কলেজ ভর্তিচ্ছু এবং নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা গতকাল সকাল থেকেই বিপাকে পড়েন।যানবাহন সংকটে আটকেপড়া কলেজ ভর্তিচ্ছু এবং নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সাধারণ জনগন যাত্রীবাহী যানবাহন না পেয়ে দ্বিগুন ভাড়ায় সিএনজি,রিক্সায় ও পায়ে হেটে গন্তব্যস্থলে পৌঁছেছেন তাও আবার যথাসময়ে না।

যানবাহন সংকটের পাশাপাশি অবরোধের কবলে আটকে পড়ে চাকরি পরীক্ষার্থী,বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষার্থী ও সাধারণ জনগন। সরকার যেমন হুট করে তেলের দাম বাড়িয়েছে তেমনি পরিবহন শ্রমিক-মালিকরাও পরিবহন যাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে ডেকে বসেছেন পরিবহন ধর্মঘট। এমন পরিস্থিতিতে চরমভাবে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ জনগন।

করোনার ধাক্কায় গত প্রায় দুই বছরে তারা নাজুক অবস্থায় পড়েছেন। একটি বাস থেকে মালিকের প্রতিদিন গড়ে যে পরিমান আয় হতো এবং শ্রমিকরা যে পরিমান আয় করতো তেল বা ডিজেলের দাম বাড়ায় বাড়তি ভাড়া না পাওয়ার কারণে আয় কমে যাওয়ায় তারাও বিপাকে পড়েছে। ফলে তারা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। ব্যাংকের কিস্তি, সরকারি ট্যাক্স টোকেন, রাস্তার চাঁদা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাড়তি ভাড়া সবকিছু মিলিয়ে জনজীবন পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে বিশেষ করে নিম্নবৃত্ত, মধ্যবৃত্ত পরিবহন শ্রমিক ও কেটে খাওয়া মানুষদের। যে কারণে যৌক্তিকভাবেই তারাও পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে।

করোনার ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে জনগনকে এখন আরো একটা ধাক্কার সম্মুখীন হতে হয় মাসের অধিক সময় ধরে। যা সত্যিই উদ্বেগজনক, মানুষ আগে ১০০/- দিয়ে ২-৩ কেজি সবজি ক্রয় করলে সেখানে এখন ঐ পরিমান টাকা দিয়ে পাচ্ছে এক থেকে দেড় কেজি পণ্য। যার ফলে তারা পরিবারে চাহিদা মেটাতে পারছেনা। ঠিক মতো পারছেনা মুখে দু’মুটো অন্ন তুলে দিতে। কারণ ব্যয় যেভাবে বাড়ছে চাকরিজীবি ও কেটে খাওয়া মানুষের আয় কিন্তু থেকেছে স্থির। ফলে তারা আয়ের সাথে ব্যয় মিলাতে পারছে না।

এমন পরিস্থিতিতে সরকার ও প্রশাসন যদি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে এদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে বলে ধারণা করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতি দিনের পর দিন আরো কঠিনের দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তাই সরকারের উচিত হবে অতি শীঘ্রই সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বিবেচনা করে লাগামহীন দ্রব্যমূল্য ও পরিবহন তেলের দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেয়া এবং অহেতুকভাবে দ্রব্যমূল্য ও তেলের দাম বৃদ্ধি পেছেনে যদি কোন স্বার্থন্বেষী দল জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া।

লেখক,কবি ও প্রাবন্ধিক এস.এম.মাঈন উদ্দীন রুবেল
mayanuddinctg171@gmail.com
01870260918

Related Posts