———————
সংবাদ মাধ্যমে কর্মরতদের জন্য অবসরভাতা চালুর দাবি তুলেছেন সাংবাদিক নেতারা। রোববার রাতে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নেতৃবন্দ এ দাবি তুলেন। বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল জার্নালিস্ট ইউনিয়নের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা জানাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, পার্শ্ববর্তী অনেক দেশেই সাংবাদিকরা অবসরকালীন ভাতা পান। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যমকর্মীদের শেষ মাসের বেতন নিয়েই চাকরি ছাড়তে হয়। দেশের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করতে হলে সাংবাদিকদের এ মৌলিক দাবিগুলো পূরণ করতে হবে।
সিইউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পটিয়া আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। অনু্ষ্ঠানে বিএফইউজে নির্বাচনে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচিত সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত সহসভাপতি শহীদ উল আলম, যুগ্ম মহাসচিব মহসীন কাজী, নির্বাহী সদস্য আজহার মাহমুদ ও প্রণব বড়ুয়া অর্ণবকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সিইউজে যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ’র সঞ্চালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথিরা ছাড়াও বক্তব্য রাখেন সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ ও সিইউজে সহসভাপতি অনিন্দ্য টিটো। এসময় মঞ্চে সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম ইফতেখারুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক কাশেম শাহ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইফতেখার ফয়সাল, নির্বাহী সদস্য মহরম হোসাইন উপস্থিত ছিলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সামশুল হক চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্রের এ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে শক্তিশালী না করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া কঠিন। সংবাদকর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদের সুরক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমগুলো সংবাদ পরিবেশন করবে মানুষ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে। কিন্তু কোন ব্যক্তিগত স্বার্থে যাতে গণমাধ্যম ব্যবহার হতে না পারে সে বিষয়ে সাংবাদিকদের সজাগ থাকতে হবে।
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, সাংবাদিকতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ না দিয়ে অপসাংবাদিকতা রোধ করা যাবে না। সাংবাদিকদের প্রাপ্য সকল সুযোগ-সুবিধা দিতে হলে কেউ ভুঁইফোড় সংবাদ মাধ্যম খুলে পার পাবে না। কিন্তু দু:খজনক হলো এখনো দেশে উৎসবের দিনও সাংবাদিকদের চেহারা থাকে মলিন। আশপাশের দেশে সাংবাদিকদের জন্য অবসরভাতা চালু করা হলেও আমরা তা করতে পারিনি।
এসময় সাংবাদিকদের জন্য গণমাধ্যম কর্মী আইন দ্রুত বাস্থবায়নের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান বিএফইউজে সভাপতি।
অনুষ্ঠানে সিউজে সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণার করা হলেও নানা জটিলতায় তা আটকে গেছে। এসব জটিলতা নিরসনে বিএফইউজে নেতৃবৃন্দকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
বিএফইউজে সহসভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে কিছু কুচক্রি মহল নিজেদের ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। সাংবাদিকরা তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে। যারা আঁতাত করে সাংবাদিকদের বিপথে নিতে চেয়েছিল সেইসব ছদ্মবেশী, ধান্দাবাজদের কাছ থেকে সংগঠনকে বাঁচাতে হবে।
বিএফইউজে সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ বলেন, সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বিএফইউজেকে একটি গোষ্ঠী যে খাদের কিনারে নিয়ে গিয়েছিল সেখান খেকে সংগঠনকে উদ্ধার করতে হবে। মামলাবাজ চক্র, যারা চেয়েছিল নির্বাচনকে ঠেকিয়ে রেখে স্বার্থ হাসিল করবে সাংবাদিকরা তাদের প্রত্যাখান করেছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী সংগঠনে বিভেদ তৈরি করতে নির্বাচন আসলেই একটি চক্র তৎপর হয়ে নানা রাজনৈতিক মিথ্যাচার শুরু করে। মূলত তাদের লক্ষ্য বিভেদ তৈরির মাধ্যমে প্রতিপক্ষকে শক্তিশালী করা।
সিইউজে সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের মান মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব পালনে বিএফইউজের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। সাংবাদিকদের স্বার্থবিরোধী যে কোন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে সবসময় সিইউজে পাশে থাকবে।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ বলেন, সাংবাদিকদের স্বার্থে লেজুড়বৃত্তির মানসিকতা পরিহার করে কাজের মধ্য দিয়ে বিএফইউজেকে এগিয়ে নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন চট্টগ্রামের খ্যাতিমান শিল্পী।