উপজেলা চট্টগ্রাম

যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করতে চায় তারা রাস্ট্রের শত্রুঃ সাংসদ গোপাল

 

সীতাকুণ্ড শঙ্করমঠের শতবর্ষপূতি ও শ্রীশ্রী বিশ্বনাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন উপলক্ষে আয়োজিত ৮ দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচীর শেষ দিন আজ ২৩ নভেম্বর মঙ্গলবার মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের ৬৬তম শুভ আবির্ভাব দিবস উদযাপন করা হয়েছে।এ উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে ছিল-বিশেষ গুরুপূজা, মঙ্গলারতি, গুরুবন্দনা, পবিত্র বেদ পাঠ, শ্রীশ্রী চÐীপাঠ ও বিকেল সাড়ে ৩টায় ‘কর্মযোগী শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজের জীবনাদর্শ’ ভিত্তিক সনাতন ধর্ম মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রাতে ‘দক্ষযজ্ঞ’ নাটক পরিবেশিত হয়।
বিশিষ্ট দানশীল ব্যক্তিত্ব লায়ন অদুল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রমথ সরকার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সনাতন ধর্ম মহাসম্মেলনের উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম পাবলিক প্রসিকিউটর ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের সাংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপাল। আর্শিবাদক ছিলেন আমেরিকার কলরেডো নিবাসী ঋষিশ্রেষ্ঠ শ্রীমৎ পরমানন্দ সরস্বতী। আর্শিবাদক ছিলেন মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি উত্তম শর্মা, চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, এনজিএস গ্রæপের পরিচালক অসিত সাহা, কুÐেশ্বরী ঔষধালয়ের পরিচালক রাজীব সিংহা, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ। প্রধান আলোচক ছিলেন এস. আলম গ্রæপের নির্বাহী পরিচালক সুব্রত ভৌমিক। মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কুশল বরণ চক্রবর্তী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শঙ্করমঠ ও মিশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর কেশব কুমার চৌধুরী। আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক তড়িৎ কুমার ভট্টাচার্য্য, অধ্যাপক অঞ্জন দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিত কুমার মল্লিক, সাংবাদিক রনজিত কুমার শীল, রনধীর ঘোষ রায়, লায়ন দিলীপ কুমার শীল, বাসুদেব দাশ, মাস্টার অজিত কুমার শীল, প্রদীপ মহাজন জহর, সুজন বিশ্বাস, অর্পণ ধর, এডভোকেট বিমল চন্দ্র শীল, এডভোকেট মোহন লাল মহাজন, অজিত কুমার শীল, রাউজানের ছিকদাইর ইউপি চেয়ারম্যান প্রিয়তোষ চৌধুরী, অর্পণ ধর, প্রবাসী প্রসনজিত শীল, সুজন শর্মা প্রমূখ।
সনাতন ধর্ম মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাংসদ মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক নেতা। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে নস্যাৎ করে দেশকে সম্প্রীতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আজকে যারা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্ট করতে চায়, ধর্মীয় বিভাজন তৈরী করে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরী কওে তারা শুধু সমাজের শত্রæ নয়, রাষ্ট্রের শত্রæ। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে স্বোচ্চার থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই রাষ্ট্র রচিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা করার জন্য। যারা এদেশের স্বাধীনতা সহ্য করতে পারেনি তারাই পূজা মÐপে হামলা করেছে। সরকার এ অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করেছে। সরকারের দৃশ্যনীয় উন্নয়ন সহ্য করতে পারছেনা তারাই বারবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে আঘাত হানার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জাতি, ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্যতম পাবলিক প্রসিকিউটর ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, আধ্যাত্মিক জীবন চর্চার মহাতীর্থপীঠ শঙ্করমঠ ও মিশন। এ মঠের গীতাপ্রজ্ঞাতীর্থ শ্রীশ্রীমৎ স্বামী জ্যোতিশ্বরানন্দ গিরি মহারাজের অন্যতম উত্তরসুরী ও মঠের বর্তমান অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী তপনানন্দ গিরি মহারাজ শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা প্রচারের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়তে নিরলস সাধনা করে যাচ্ছেন। ধর্ম চেতনা ও ধর্মবোধ মানুষকে সত্য সনাতন সুন্দরের পথে পরিচালিত করার ফলে সমাজ থেকে অন্যায়-অনাচার দূরীভূত হয়। এখানে মঠ-মন্দির শুধু ধর্ম চর্চার সাধনা করে না। মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধাবোধ সৃষ্টি ও সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করে। ধর্মবোধ মানুষকে ন্যায়ের শিক্ষা দিয়ে সভ্য করেছে।
তিনি বলেন, বিশ্বজনীন ধর্মগ্রন্থ শ্রীশ্রীমদ্ভগবত গীতার কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তি মানুষকে নানা অপকর্ম থেকে বিরত রাখে। সত্যিকার অর্থে নিষ্কাম কর্ম এবং অন্ধাকারাচ্ছন্ন পথ থেকে উত্তরণের জন্য মনুষ্যত্বের সাধনা করাই হলো গীতা শিক্ষা। গীতার আদর্শ ও উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করতে পারলে সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ হবে। ####

Related Posts