মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে কোন প্রতিষ্ঠানের মালিক-শ্রমিকের মধ্যে একটি সুন্দর ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে। কারণ মালিকদের সবসময় মনে রাখতে হবে, শ্রমিকেরা শ্রম দিয়েই মালিকের কারখানা চালু রেখে অর্থ উপার্জনের পথ করে দেয়। আবার সেই সাথে সাথে শ্রকিদেরও মনে রাখতে হবে, এই কারখানাগুলো আছে বলেই তারা কাজ করে খেতে পারছেন, তাদের পরিবার পরিজনকে পালতে পারছেন বা তারা নিজেরা আর্থিকভাবে কিছু উপার্জন করতে পারছেন। কারখানাগুলো যদি ঠিকমত না চলে তাহলে নিজেদেরই ক্ষতি হবে। আজ ৮ ডিসেম্বর ২০২১ ইংরেজি বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে শ্রম অধিদপ্তরাধীন চট্টগ্রামের নাসিরাবাদস্থ নব-নির্মিত শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন ভবন, অন্যান্য জেলার শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন ভবন ও মহিলা কর্মজীবি হোস্টেলসহ ৮টি ভবনের ভার্চুয়ালি শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। পরে নতুন ভবন গুলোর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যে কারখানা আপনার রুটি রুজির ব্যবস্থা করে, আপনার খাদ্যের ব্যবস্থা করে বা আপনার জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে সেই কারখানার প্রতি যতœবান হতে হবে। বিশ্ব এখন প্রতিযোগিতামূলক। এই প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে যদি শিল্প কলকারখানার উৎপাদন ও রপ্তানি যদি সঠিকভাবে চলতে হলে কারখানাগুলো যথাযথভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনেক সময় কিছু কিছু শ্রমিক নেতা বা কোনো কোনো মহল বাইরে থেকে উসকানি দিয়ে কলকারখানায় অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলে রপ্তানির পাশাপাশি কাজের পরিবেশও যে নষ্ট হবে। তখন বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘুরতে হবে। সেই কথাটা মনে রেখে শ্রমিকদের দায়িত্ববান ভূমিকা পালন করতে হবে। মালিক ও শ্রমিক দুই পক্ষের সঠিক উদ্যোগেই যে একটি কারখানা সফলভাবে উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের অসুবিধা কি বা তাদের জীবন-জীবিকা সুন্দরভাবে চলছে কি না তা মালিকদের দেখতে হবে। শ্রমিকেরা তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্য যেন তারা পায় তা মালিক পক্ষকে দেখতে হবে। একইসাথে কারখানাটা সুন্দরভাবে যেন চলে, উৎপাদন যেন বাড়ে, সেই বিষয়েও শ্রমিকদের আন্তরিক হতে হবে।
শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরার পাশপাশি স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে তার নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। দেশের মানুষ কষ্টে থাকবেনা। গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করা হয়েছে। প্রতিটি মানুষ উন্নত জীবন পাবে, কেউ গৃহহীন থাকবে না। বর্তমান সরকার শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ ও শিল্প উন্নয়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, ভবিষ্যতের যে পরিকল্পনা সাজিয়েছে, সেসব কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম প্রান্তের নব-নির্মিত শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন ভবনের উদ্বোধনীতে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক এস.এম এনামুল হক। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আবু রায়হান দোলন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নাসিরাবাদস্থ শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তনের উপ-পরিচালক মোঃ আলমগীর কুমকুম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ মোঃ লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার নওরীন সুলতানা, বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রকিবুল ইসলাম চৌধুরী, বিকেএমইএ’র সাবেক পরিচালক শওকত ওসমান, ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মোরশেদ আলম ও জাতীয় মহিলা শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মিসেস রোখসানা পারভীন। জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র ও শিক্ষায়তনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ##