সারাদেশের ন্যায় আগামী ১১ ডিসেম্বর শনিবার থেকে ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ২০২১ ইংরেজি পর্যন্ত চট্টগ্রামেও অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে ৪ দিনব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২১। এ উপলক্ষে জেলা পর্যায়ে অবহিতকরণ ও পরিকল্পনা সভা আজ ৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত হয়। ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খানের সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡াবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার চৌধুরী, জেলা তথ্য অফিসের উপ-পরিচালক মোঃ সাঈদ হাসান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোঃ সেলিম উদ্দিন, সহকারী জেলা প্রাথমিক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ কফিল উদ্দিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম জাহিদুল ইসলাম। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোঃ নুরুল হায়দর চৌধুরী। সভায় জেলার ১৪ উপজেলার স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্টান ও জাতীয় পুষ্টি সেবার বাস্তবায়নে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সভার আয়োজন করেন। উক্ত ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে জেলা পর্যায়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিধি মেনে ৬-১১ মাস বয়সী ৯০ হাজার ১৯০ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ৪ হাজার ৮৮২ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়ে এই ক্যাম্পেইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা বর্তমান সময়ে খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই এই ক্যাম্পেইন কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অপুষ্টি দূরীকরণ সম্ভব হবে। সামাজিক ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরিধান ও হাত ধোয়ার বিধি মেনে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে। কোন শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে যাতে বাদ না যায় সে দিকে সবাইকে অবশ্যই নজরে রাখতে হবে। এছাড়া শিশুর বয়স ৬ মাসপূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়াতে হবে।
তিনি বলেন, পাশাপাশি মসজিদ, হাটবাজার, বাস স্ট্যান্ড, নৌ-ঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণস্থানেও মাইকিং করে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে। এ কর্মসূচী সফল করতে সরকারী প্রতিষ্টান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারী কর্মকর্তা, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী শিশুদেরকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে তিনি নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খান বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। পরিবারের রান্নায় ভিটাামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্র্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ খাবার থেতে দিতে হবে। চট্টগ্রাম জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিতব্য সকল জাতীয় কর্মসূচী সমূহ শতভাগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। পূর্বের সফলতা এবারও ধরে রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচী সঠিকভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উক্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নে জেলা সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তাগণকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, করোনাকালীন এ সময়ে জেলা পর্যায়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য বিধি মেনে ৬-১১ মাস বয়সী ৯০ হাজার ১৯০ জন শিশুকে একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ৪ হাজার ৮৮২ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলার বাইরে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৪১টি ওয়ার্ডে ৬-১১ মাস বয়সী প্রায় ৮২ হাজার শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী সাড়ে ৪ লক্ষ শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্স্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। ####