সিনিউজ ডেস্ক
কলকাতা পুরভোটে বিরাট জয়ের পর রাজ্যের পরিবহন ও আবাসন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে ফের মেয়র নির্বাচিত করল তৃণমূল কংগ্রেস। গত মেয়াদে মেয়র থাকা ফিরহাদের ওপরই আস্থা রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে মেয়র নির্বাচিত করা হয়। পাশাপাশি ডেপুটি মেয়র করা হয় অতীন ঘোষকে। আর চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করা হয় মালা রায়কে।
মেয়র নির্বাচিত করতে আজ দুপুর দুইটায় হাজরা রোডের মহারাষ্ট্র ভবনে সদ্য বিজয়ী ১৩৪ তৃণমূল কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মমতা ব্যানার্জি। সেখানে কলকাতার মেয়র হিসেবে ফিরহাদের নাম প্রস্তাব করেন রাজ্য তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সি। তাতে সায় দেন কাউন্সিলররা। সর্বসম্মতভাবেই কলকাতা সিটি করপোরেশনে তৃণমূলের দলনেতা নির্বাচিত হন ফিরহাদ। অর্থাৎ তিনিই হতে চলেছেন কলকাতার নয়া মেয়র। তাকে মেয়র ঘোষণা দিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে শিগগিরই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।
মেয়রের দায়িত্ব পাওয়ার পর ফিরহাদ বলেন, মমতা যে বিশ্বাস রেখেছেন, তাতে আমি আপ্লুত। মৃত্যু পর্যন্ত নিজের জীবন দিয়ে মমতার বিশ্বাসের মর্যাদা রাখব।
মেয়র হিসেবে নিজের প্রথম কাজ কী হতে চলেছে, তাও স্পষ্ট করে দেন ফিরহাদ। জানান, ভোটের আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল, তার প্রতিটি পালন করা হবে।
এদিকে মালা রায়কে চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করা ব্যাপারে মমতা বলেন, অভিজ্ঞতা তো গুরুত্বপূর্ণ। তাই চেয়ারপার্সন পদে টানা ছ’বারের কাউন্সিলর মালাকে বসানো হচ্ছে। তারইমধ্যে দু’জন ডেপুটি মেয়র করা হতে পারে বলে যে জল্পনা ছিল, সেই পথে হাঁটেনি তৃণমূল। ডেপুটি মেয়র করা হয়েছে অতীনকে। জল্পনামতো দেবাশিস কুমারকে ডেপুটি মেয়র করা না হলেও মেয়র ইন কাউন্সিলে সর্বপ্রথম তাঁর নামই ঘোষণা করেছেন মমতা। তাছাড়া আরও ১২ জনকে মেয়র ইন কাউন্সিল করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়েছে ১৬ টি বোরো কমিটির চেয়ারম্যানের নাম। তাঁদের মধ্যে ন’জনই মহিলা।
মেয়র ইন কাউন্সিল হবেন ১৩ জন
মেয়র ইন কাউন্সিল হলেন, অতীন ঘোষ, তারক সিংহ, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, সন্দীপন সাহা, মিতালী বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিস কুমার, জীবন সাহা, দেবব্রত মজুমদার, আমিরুদদিন ববি, বৈশ্বানর চট্টাপাধ্যায়, রাম প্যারে রাম, স্বপন সমাদ্দার এবং সন্দীপ বকসী।
মাথা নিচু করে কাজ করুন: মমতা
৪০ জন নতুন কাউন্সিলরকে ভাল করে কাজ শিখতে বললেন মমতা। জানালেন মাথা নিচু করে কাজ করতে হবে। বলেন, ‘যত জিতবে, তত মাটির দিকে নজর দিতে হবে। তৃণমূলে অহংকারের কোনো জায়গা নেই।’
সদ্য সমাপ্ত পুরনির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন মমতা। যদিও দুই তিনটি আসন পাওয়া বিজেপি ও বামেরা নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ তুলেছে।
মমতা বলেন, ‘‘এত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কেউ করে দেখাতে পারেনি। আমরা করে দেখিয়েছি। আগে থেকেই নির্দেশ ছিল গোলমাল করা যাবে না। গণ্ডগোল হয়নি।’
প্রতি ৬ মাস রিপোর্ট কার্ড নেব: মমতা
নির্বাচিত কাউন্সিলরদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘কথা কম কাজ বেশি করুন’’। তিনি বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের বেশি বিবৃতি দিলাম অথচ কাজের কাজ করতে পারলাম না— এ সব তৃণমূলে চলবে না। বিজেপিতে হয়।’’ মমতা জানান প্রতি ছ’মাসে কাউন্সিলরদের রিপোর্ট কার্ড নেবেন। কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না তা দেখবেন।