আইন আদালত কক্সবাজার

সিনহা হত্যা মামলার রায় পিছিয়ে দুপুরে

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ আসামির সাজা হবে কিনা, তা জানা যাবে দুপুরে।

কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সোমবার বেলা ২টার পর এ মামলার রায় ঘোষণা করতে পারেন বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহবুবৃল আলম টিপু জানান।

এর আগে এ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম বলেছিলেন, রায় হতে পারে সাড়ে ১০টার দিকে। তার আগে সেভাবেই আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা জোরদার করা কয়েছিল।

ফরিদুল আলম নিজে সকাল ৯টার আগেই আদালত ভবনে প্রবেশ করেন। বলা হয়েছিল, সাড়ে ৯টার দিকেই এ মামলার আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হতে পারে।

সে অনুযায়ী তাদের কারও কারও আত্মীয়রাও উপস্থিত হয়েছিলেন আদালত প্রাঙ্গণে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীরাও সকাল থেকে উপস্থিত।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহবুবৃল আলম টিপু বেলা সোয়া ১০টায়  বলেন, “আদালতের পেশকার আমাদের বলেছেন, জজ সাহেব আজ আদালতে বসবেন বেলা ২টায়। তখনই আদালতের কার্যক্রম শুরু হবে। আজ রায় ঘোষণার ধার্য দিন। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।”

আসামিদেরও আর সকালে আদালতে আনা হয়নি। দুপুরে আদালত বসার আগে কোনো এক সময় তাদের আনা হতে পারে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সকালেই আদালতে প্রবেশের দুটি ফটকে অবস্থান নিয়ে সাত স্তরের নিরাপত্তাবেষ্টনী গড়ে তুলেছেন।

“পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশের সঙ্গে অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন। অপ্রয়োজনীয় যানবাহন নিয়ে কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে সেটি দেখা হচ্ছে। বিচারপ্রার্থী ছাড়া কাউকে আজ আদালতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।”

আদালতরর প্রবেশ পথ, জেলা প্রশাসক কার্যালয় এলাকা ও কাঁচা বাজার এলাকায় পুলিশের মোট ছয়টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।

আদালত এলাকায় ৮০ জনের মত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে সদর থানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। পাশাপাশি পুলিশের একটি দলকে ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হয়েছে।

সকালে আদালতে প্রবেশের সময় দেখা যায়, পুলিশ সদস্যরা ফটকে অবস্থান নিয়ে আছেন। কাউকে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। আদালতের ভবনগুলোর বিভিন্ন তলাতেও পুলিশের অবস্থান দেখা গেছে।

এ মামলায় আসামির তালিকায় রয়েছেন টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জন। বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যার অভিযোগ রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে।

এই হত্যাকাণ্ডের পরই বেরিয়ে আসে, মিয়ানমার সীমান্তবর্তী টেকনাফে মাদকবিরোধী অভিযানের নামে কীভাবে বন্দুকযুদ্ধ সাজিয়ে খুন করে যাচ্ছিলেন পোশাকী বাহিনীর কর্মকর্তা প্রদীপ।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর ৫ অগাস্ট ওসি প্রদীপ দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয়জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন তার বোন।

সাড়ে চার মাস পর ১৩ ডিসেম্বর র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

পরের বছর ২০২১ সালের ২৭ জুন সব আসামির উপস্থিতিতে বিচারক ইসমাইল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

প্রায় দুই মাস পর ২৩ অগাস্ট বাদী শারমিন ফেরদৌসের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়। মামলায় মোট সাক্ষী ছিলেন ৮৩ জন।

তার মধ্যে নয়জন প্রত্যক্ষদর্শীসহ ৬৫ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় হতে যাচ্ছে। সর্বশেষ সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
সূত্রঃ বিডিনিউজ

Related Posts