নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে গেছে। করোনার কারণে যাত্রী সংখ্যা কম হওয়ায় আপাতত পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। ওয়াটার বাস সার্ভিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন অনেক বিদেশযাত্রী। বিশেষ করে দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও মূল শহরের বাসিন্দারা বেশি বেকায়দায় পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার পতেঙ্গার নেভালে ওয়াটার বাসের জেটিতে গিয়ে দেখা যায়, জেটিটি ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। জেটির রেলিংয়ের রড ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। আশপাশের দোকানিরা জেটিতে মালামাল ফেলে রেখেছে। ২০১৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সদরঘাট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ওয়াটার বাস চালু করা হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ সদরঘাট ও পতেঙ্গা দুই স্টেশনে টার্মিনাল ও জেটি সুবিধা তৈরি করে।
যাত্রী পরিবহন সেবা পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেয়া হয় চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল) ও এসএস ট্রেডিংকে। তারা বন্দরকে বার্ষিক ভাড়া দিয়ে এই নৌপথে যাত্রী পরিবহন করে।
ওয়াটার বাসে সদরঘাট থেকে পতেঙ্গায় পৌঁছাতে সময় লাগে ২০ মিনিট। আর সড়কপথে সদরঘাট থেকে পতেঙ্গা হয়ে শাহ আমানত বিমানবন্দরে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লাগে। যানজট বেশি হলে তিন থেকে চার ঘণ্টাও লেগে যায়। সড়কে যানজটে পড়ে অনেক সময় বিমানযাত্রীরা ফ্লাইট মিস করেন। তার উপর বিমানবন্দর সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ চলায় যানজট আরও বেড়ে গেছে।
নগরের চকবাজার কাতালগঞ্জের বাসিন্দা ইমরান আফরান জানান, শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে গত ১৫ নভেম্বর কলকাতা যান। চকবাজার থেকে বিমানবন্দর যেতে তার দুই ঘণ্টা সময় লাগে। ওয়াটার বাস চালু থাকলে মাত্র ২০ মিনিটে পতেঙ্গায় পৌঁছে যেতেন।
ওয়াটার বাস চালু থাকাকালীন প্রতিদিন সকাল ৭টা, ৮টা, দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট, বেলা ৩টা ও সন্ধ্যা ৭টায় পাঁচটি ওয়াটার বাস সদরঘাট থেকে ছেড়ে যেত। ফিরতি পথে সকাল সাড়ে ৮টা, বেলা সাড়ে ১১টা, বেলা ২টা ২৫ মিনিট, বিকেল সাড়ে ৪টা ও রাত ৯টা ১৫ মিনিটে পতেঙ্গা থেকে ছেড়ে আসতো। জনপ্রতি ভাড়া ছিলো ৩৫০ টাকা।
এদিকে করোনা মহামারি শিথিল হওয়ার পর ফের বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। শাহ আমানত বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ রুটের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটেও বিমান চলছে। কিন্তু এখনও ওয়াটার বাস চালুর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
ইঞ্জিনিয়ার মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘জেটিতে আমাদের ওয়াটার বাসগুলো রয়েছে। কিন্তু যাত্রীর অভাবে সেগুলো চলছে না। এখন আবার বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করছি ফের যাত্রী হবে। তাই শিগগির ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হবে। প্রায় তিন মাস দেশে লকডাউন ছিল। করোনার কারণে শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তখন যাত্রীর সংখ্যা শূন্যে নেমে আসে। মূলত তখনই ওয়াটার বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেয়া হয়।