চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার এলাকা থেকে যুবলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী মেহেদি হাসানকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে বহু মামলার আসামি নূর মোস্তফা টিনুর বিরুদ্ধে। তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় টিনুর অনুসারীরা তাকে মারধরের ও তার সাথে থাকা টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন মেহেদি।
রবিবার (৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে চকবাজার এলাকার মেডিকেলের পূর্ব গেইটের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা মেহেদি।
তুলে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে মেহেদীকে ছেড়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
পর ছাড়া পেয়ে মেহেদি জানান, চকবাজারে তার বন্ধুর ওষুধের দোকানে তিনি বসেছিলেন। এসময় তার আরেক বন্ধুর মোবাইলে কল করে কাউন্সিলর টিনু জানতে চান মেহেদি পাশে আছেন কিনা। এরপর তিনি আমার সাথে কথা বলার একপর্যায়ে বলেন, আমাকে তুলে নিয়ে থানায় দিয়ে আসবেন।
এই সংক্রান্ত তাদের দুইজনের কথোপকথন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, টিনুকে বলতে শোনা যায়, ‘আমার বিরুদ্ধে তুই যেখানে সেখানে যা তা (গালবাজি) কেন বলছিস? শুধুমাত্র মিঠুর অনুরোধে তোকে কিছু করিনি। তোকে ঘর থেকে টেনে হিঁছড়ে নিয়ে এসে থানায় তুলে দেব। সিটি করপোরেশনের ময়লার মতো টেনে তুলে নিয়ে আসব তোকে।’
তখন মেহেদি কি অপরাধে তাকে তুলে নেওয়া হবে বারবার সেটা জানতে চান। একপর্যায়ে হুমকির সুরে টিনু বলেন, ‘তুই আমার বিরুদ্ধে আর কোথাও কিছু বললে তোর খবর আছে। তোর চেয়ে বড় নেতা আমার সাথে খেলতে গিয়ে কাত হয়ে গেছে। তুই কতবড় কাবিল হইছিস!
নিজেকে সরকারি কর্মকর্তা দাবি করে টিনু তখন বলেন, ‘তুই আমার বিরুদ্ধে যা-তা বলতে পারিস না। আমি তোকে তুলে নিয়ে আসব।’ এসময় টিনু ধমকের সুরে তার রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চান। তখন মেহেদি বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগ-যুবলীগ-আওয়ামী লীগ করি। সেটার সার্টিফিকেট আপনি না দিলেও আমার নেতারা দেবেন।’
মেহেদি অভিযোগ করে বলেন, এই ফোনকলের আধাঘন্টা পর ১৫ থেকে ২০ জন টিনুর অনুসারীরা একটা ওষুধের দোকানের সামনে থেকে আমাকে তুলে নিয়ে যায় কাউন্সিলর কার্যালয়ে। যাওয়ার সময় আমার সাথে থাকা টাকা তার ছিনিয়ে নেয়। কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। পরে উপর মহলের ফোন পেয়ে আমাকে পাঁচলাইশে এনে ছেড়ে দেয়।এই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক যুবলীগ ছাত্রলীগের ৪০-৫০ জন নেতাকর্মী জড়ো হয়ে চকবাজার এলাকায় কাউন্সিলর টিনুকে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে নানান স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মেহেদি হাসান বলেন, ‘আমি থানায় ওসি সাহেবকে বিস্তারিত জানিয়েছি। আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। একজন জনপ্রতিনিধি নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার কার্যালয়ে এইভাবে কাউকে তুলে নিয়ে মারধর করতে পারেন না। এই নির্যাতনের আমি উপযুক্ত বিচার চাই।’
অভিযোগে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাউন্সিলর বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলের অ্যাম্বুল্যান্স সমিতির নেতাদের অনুরোধে আমি তাকে কল দেই। সে সবার বিরুদ্ধে সবখানে নানা বাজে কথা বলে বেড়ায়। আমি তাকে কাউন্সিলর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বুঝিয়েছি যেন সে ঝামেলা না করে। তাকে মারধর করিনি। সে অহেতুক থানায় গিয়ে মিথ্যে কথা বলছে। আমি বিস্তারিত সব ওসিকে জানিয়েছি
এ বিষয়ে জানতে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।