শিক্ষা-ক্যাম্পাস

নতুন আঙ্গিকে টিএসসি

সিনিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রকে (টিএসসি) নতুন আঙ্গিকে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশলীরা। টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আলী আকবর ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনামতে এ কাজ বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত হলেও এতে বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের প্রকৌশলীরা থাকবেন না। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুরো কাজ সম্পূর্ণ হবে। নকশা প্রস্তুত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণপূর্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে চাহিদাপত্রও নিয়েছে। এখন নকশার কাজ চলছে।

তারই ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সভা করেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রকৌশলীরা।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে ডাকসুর সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার জানান, টিএসসি আগের চেয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব ও সাংস্কৃতিক হবে। বর্তমান কাঠামোকে ঠিক রেখে যেন এটা নতুনভাবে সাজানো হয়, এ জন্য তিনি দাবি জানান।

এদিকে শিক্ষকদের কেউ কেউ টিএসসির দৃষ্টিনন্দন ভবনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন।

নতুন প্ল্যান সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উন্মোচন করার দাবি জানান বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আর টিএসসির মতো একটি ঐতিহ্যবাহী স্থানের পরিকল্পনা কীভাবে করা হবে, তা জানার অধিকার শিক্ষার্থীদের রয়েছে। টিএসসির বর্তমান যে অবকাঠামো, তা একটি প্রাচীন স্থাপনা। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেই শিক্ষার্থীবান্ধব টিএসসি পুনর্নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।”

অন্যদিকে টিএসসি ভবন ভেঙে বহুতল ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, “প্রশাসন এরূপ ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক তাৎপর্য উপেক্ষা করে টিএসসি ভবন ভেঙে আধুনিক বহুতল ভবন নির্মাণ করতে চাচ্ছে। মূলত তারা মতবিনিময় ও সংস্কৃতিচর্চার স্থান সংকুচিত করতে চাচ্ছে। এ ধরনের কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা তৈরি করে চিন্তা চর্চা ও মতবিনিময়ের পরিবেশ নষ্ট করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের চতুর্থ বর্ষে শিক্ষার্থী শারমিন জাহান বলেন, “পুরোনো একটি স্থাপনা নতুন করে তৈরি করতে যাতে আমাদের সংস্কৃতি ও শিক্ষার্থী বান্ধব আবহ হারিয়ে না যায় এবং করপোরেট না হয়।”

এদিকে টিএসসি ভেঙে ফেলার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ। তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে টিএসসির নকশার কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর যে সৌন্দর্যবোধ, রুচি ও আধুনিক স্থাপত্য সম্পর্কে ধারণা আছে, আমার বিবেচনায় টিএসসি ভবনের জন্য নিশ্চয়ই ভালো কিছু হবে। যেহেতু নকশার কাজ এখনো শেষ হয়নি, তাই এটি নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে চাই না।”

প্রকল্প সম্পর্কে জানতে চাইলে পিডব্লিউডি ঢাকা সার্কেল-১৪-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, টিএসসিসহ কয়েকটি স্থাপনা প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনাতেই গণপূর্ত মন্ত্রণালয় করবে। টিএসসি ভেঙে নতুন করে সাজানো হবে বলেও তিনি জানান।

জানতে চাইলে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান স্থপতি আ স ম আমিনুর রহমান জাগরণকে জানান, নকশা তৈরির কাজ চলেছ। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।

Related Posts