নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম বিভাগে করোনা ভাইরাসের টিকা সরবরাহ কার্যক্রম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে খসড়া তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। তবে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব স্থানে করোনার সংক্রমণ বেশি ঘটেছে সেসব এলাকায় টিকা সরবরাহ করা হবে বেশি। সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ টিকা পাবে ঢাকা বিভাগ। এরপরই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, টিকা বণ্টনের ক্ষেত্রে সবার আগে প্রাধান্য পাবে ঢাকা। প্রথম ধাপে আসা ৫০ লাখ ডোজ টিকা থেকে ঢাকা বিভাগের ৫০ লাখ মানুষ টিকা পাবে। চট্টগ্রাম বিভাগ আসবে ৩০ লাখ টিকা।
জেলাওয়ারি টিকা বন্টনের খসড়া তালিকা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলায় তিন লাখ মানুষ টিকা পাবে। বৃহত্তর চট্টগ্রামের কক্সবাজার জেলায় টিকা পাবে আড়াই লাখ মানুষ। এছাড়া রাঙামাটিতে ৬০ হাজার, খাগড়াছড়িতে ৬০ হাজার এবং বান্দরবানে ৫০ হাজার মানুষ করোনার টিকা পাবে শুরুতে।
করোনা টিকা কাদের দেওয়া হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে— তা নিয়ে তালিকা তৈরির কাজ চলছে চট্টগ্রামে। করোনা মোকাবেলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখ সারির কর্মী, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার তালিকা প্রণয়নের কাজ করছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। অন্যদিকে চট্টগ্রাম জেলার তালিকা তৈরির কাজ করছে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের কার্যালয়। ইতিমধ্যে দুই সংস্থাই চট্টগ্রামের বিভিন্ন দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ছাড়াও উপজেলাগুলোতে নির্ধারিত ছকে তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে এই তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ শেষ হতে পারে।
গত বুধবার থেকেই টিকাদানকারী কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রশিক্ষণ চলছে ঢাকায়। চিকিৎসকদের ২৫ জনের একটি প্রশিক্ষক দল নিজেরা করোনার টিকা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পরে তারা অন্যদের প্রশিক্ষণ দেবেন। প্রাথমিকভাবে সারা দেশে সাত হাজার ৩৪৪টি টিম টিকা দেওয়ার কাজ করবে। প্রতিটি টিমে ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘সবার আগে টিকা দেওয়া হবে টিকাদানকারী পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের। এ ক্ষেত্রে ঢাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সরকারি হাসপাতালগুলো প্রাধান্য পাবে। তার সঙ্গে একই সময়ে টিকা দেওয়া হবে মাঠপর্যায়ের একদল স্বাস্থ্যকর্মীকে। বলা যায় পাইলট আকারে তাদের টিকা দেওয়া হবে। তারাই পরে সাধারণ মানুষকে টিকা দেবেন। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে টিকাদানকারীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করে ফেলব আমরা।’
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জানুয়ারি প্রথমে ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসবে। পরে ভারত থেকে সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরও তিন কোটি টিকা দেশে আসবে। দেড় কোটি মানুষের প্রতিজনকে দুই ডোজ করে মোট তিন কোটি টিকা দেওয়া হবে।