আন্তর্জাতিক লিড নিউজ

বাইডেন যা গুরুত্ব দেবেন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক |

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক হচ্ছে জো বাইডেনের। মার্কিনরা বলছেন বিদায় ট্রাম্প, স্বাগতম বাইডেন।
সবার চোখ এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের দিকে।

শপথ গ্রহণের পরেই পুরো উদ্যমে কাজে লেগে পড়বেন জো বাইডেন। আর প্রথম কর্ম দিবসেই স্বাক্ষর করে জারি করবেন বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ।

মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক:
করোনা ভাইরাসের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুের সংখ্যা ছাড়িয়েছে চার লাখেরও বেশি। করোনা পরিস্থিতি সামলানো তার প্রশাসনের কাছে সবচেয়ে গুরত্ব পাবে সে কথা তিনি আগে থেকেই জানিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, শপথ নেওয়ার পর এ মহামারি ঠেকাতে তিনি মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিয়ে নির্বাহী আদেশ দেবেন।

১০০ দিনে ১০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন ডোজ:
বাইডেন কোভিডের বিরুদ্ধে তার প্রথম ১০০ দিনের কার্যদিবসে কমপক্ষে প্রথম ডোজ সহ ১০০ মিলিয়ন বা ১০ কোটি টিকা দেওয়ার চূড়ান্ত লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। এ বিষয়ে এই কাজকে তিনি গতিময় করতে চান। একইসঙ্গে করোনা প্রেক্ষিতে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম বা পিপিই’র জন্য তিনি কার্যনির্বাহী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলেও আশা করা হচ্ছে।

ডব্লুএইচও’র সঙ্গে পুনরায় যোগদান:
বাইডেন তার কর্মসূচিতে আমেরিকার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লুএইচও) ত্যাগের সিদ্ধান্তের বিপরীতে দাঁড়াবেন বলে আশা করে হচ্ছে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক ত্যাগ করতে চাইলেও বাইডেন তা ধরে রাখবেন বলেই আশা করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক পদক্ষেপ:
বাইডেন জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিপর্যস্ত মার্কিন অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করতে ১.৯ ট্রিলিয়ন ডলার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পরিকল্পনা আছে তার। তিনি বলেছেন, ‘নষ্ট করার মতো সময় নেই। ’ আর বাইডেনের ট্রানজিশন টিম জানিয়েছে, নতুন প্রেসিডেন্ট শিগগিরই কেবিনেট এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দেবেন তারা যেন শ্রমিক পরিবারগুলোকে আর্থিক ভাতা দিতে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়। এছাড়া উচ্ছেদ অভিযানের স্থগিতাদেশের মেয়াদ ও বন্ধককৃত বাড়ির নিলামের সময়সীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বাইডেনের।

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন:
দায়িত্বগ্রহণের পর শুরুর দিকের সময়গুলোতেই যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সঙ্গে যুক্ত করবেন বাইডেন। শুধু তাই নয়, জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে আরও উচ্চ মানের পদক্ষেপ নেবেন তিনি। প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে জলবায়ু সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে তার। বাইডেন বলেছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণের হার শূন্যতে নামিয়ে আনতে এ বছর আইন কার্যকরের জন্য কংগ্রেসের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি।

অভিবাসন নীতি:
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের সাত দিনের মাথায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রাথমিকভাবে সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। তবে আদালতে কয়েকটি চ্যালেঞ্জের পর তালিকায় কিছুটা পরিবর্তন আসে। বর্তমানে ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, ভেনেজুয়েলা ও উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ট্রাম্প আরোপিত এ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে অগ্রাধিকার দেবেন বাইডেন।

অভিবাসীদের জন্য আরও বড় একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এ ডেমোক্র্যাট নেতা। বলেছেন, ১ কোটি ১০ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য কংগ্রেসে বিল পাঠাবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন বাইডেন। সীমান্তে দেয়াল নির্মাণকে অর্থের অপচয় হিসেবে দেখছে তার প্রচারণা শিবির। তার চেয়ে সীমান্তে নতুন নতুন স্ক্রিনিং ব্যবস্থা চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্ধ দেওয়ার প্রতিই আগ্রহ তাদের।

৫০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির মাঠে বিচরণ ডেমোক্র্যাট নেতা জো বাইডেনের। তবে বুধবার (২০ জানুয়ারি) রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং দায়িত্বভার নিতে যাচ্ছেন তিনি। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন বাইডেন। বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা, করোনা মহামারি মোকাবিলাসহ বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার সামনে।

Related Posts