আইটি ডেস্ক:
গুগলে প্রকাশিত সংবাদের লভ্যাংশ চায় অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যম। এ উদ্দেশ্যে নতুন একটি আইনও জারি করেছে দেশটির সরকার। তবে নির্দিষ্ট অংকের কোন মুনাফা দিতে চাচ্ছে না গুগল। নতুন আইনের বিরোধীতা করে উল্টো অস্ট্রেলিয়াতে সেবা দেয়া বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ নিয়ে বেশ জলঘোলা করেছে দুপক্ষ। সিনেটের শুনানিতেও চলেছে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়।
অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমের দাবি, জনগণ গুগলে যেসব খবর খোঁজ করে পড়েন তার বিনিময়ে তাদের বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখতে হয়। যা থেকে প্রচুর পরিমাণে আয় করছে গুগল। অথচ এই বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে গুগল যে লাভ করছে তার দাবীদার ঐ সংবাদমাধ্যমগুলোও। গুগলের কাছে লাভের অংশ না পেয়েই সরকারের দ্বারস্থ হয় অস্ট্রেলীয় গণমাধ্যম। সরকারের তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় জারি হয় নতুন আইন।
এ আইনের ফলে গুগল, ফেসবুকসহ সব অনলাইন প্লাটফর্মকেই সংবাদ সংস্থাগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে খবর বা যেকোন অনলাইন কনটেন্ট প্রকাশের জন্য তাদেরকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিতে হবে। তবে গুগলের দাবি এই অর্থের পরিমাণ যদি আগে থেকেই নির্ধারিত করে দেয়া হয় তাহলে সেটি সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত তো নয়ই বরং এটি তাদের আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ানসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এখবর প্রকাশিত হয়েছে।
যদিও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন স্পষ্টভাবে বলেছেন “কারো হুমকিতে অস্ট্রেলিয়া পিছপা হবে না।”
অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের এ আইনের শুনানিতে গুগলের এরিয়া ম্যানেজার মেল সিলভা বলেছেন, “এই আইন একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। আপনারা যদি আইন করে আমাদের লভ্যাংশ দিতে বাধ্য করতে চান তাহলে অস্ট্রেলিয়াতে গুগল সার্চ বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আমাদের জন্য আর কোন পথ খোলা নেই।”
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার আইনপ্রণেতারা গুগলের এই অবস্থানকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ আখ্যা দিয়েছেন। সিনেটর রেক্স প্যাট্রিক গুগলের প্রতিনিধিকে বলেন, “কয়দিন পর গোটা বিশ্বই এমন আইন করবে। তখন কি আপনারা সারা দুনিয়াতে গুগল সার্চ বন্ধ করে দিবেন?”
অস্ট্রেলিয়ার দাবি গুগলে প্রকাশিত খবরের জন্য দেশটিতে লোকজন টেলিভিশন বা সংবাদপত্রের খবর আর আগের মতো পড়ছেন না। ফলে গণমাধ্যম লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছে। একটি অনলাইন প্লাটফর্মকে সুবিধা দিতে দেশের বাকি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত করাটাও তাদের কাছে গণতন্ত্রবিরোধী।