জাতীয় লিড নিউজ স্বাস্থ্য

দেশে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে দেশে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হলো। এসময় একই হাসপাতালের আরও একজন চিকিৎসক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক, ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা ও একজন সেনা কর্মকর্তাকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়। নিজের সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত হয়ে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল প্রান্তে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হয় ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এরপর শুরুতেই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এরপর একে একে একই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
পুরোটা সময় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় তিনি ভ্যাকসিন গ্রহীতা প্রত্যেকের সঙ্গেই কথা বলেন এবং সবাইকে সাহস দেন। ভ্যাকসিন নিয়ে নানা ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সত্ত্বেবও এই পাঁচ জন ভ্যাকসিন নিতে এগিয়ে আসায় তিনি সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনা ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করল। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট সেই ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হলো। এর মধ্যে সিরামের সঙ্গে যোগাযোগ করল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। আমি বলেছিলাম, যতগুলো ডোজ ভ্যাকসিন কেনা যায়, আমরা নিয়ে নেব। সেভাবেই সিরাম ও বেক্সিমকোকে সঙ্গে নিয়ে সরকার ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করেছে। সেই সূত্রেই এখন ভ্যাকসিন দেশে এসেছে।
অনুষ্ঠানে কুর্মিটোলা প্রান্তে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমরা সুষ্ঠুভাবে টিকা দেওয়ার সব ব্যবস্থা নিয়েছি। এ জন্য ৪২ হাজার নেতাকর্মী কাজ করছে। টিকা গ্রহীতাদের নিবন্ধনের জন্য আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি অ্যাপ অনুমোদন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য বলছে, আজ কুর্মিটোলা হাসপাতালে আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) এই হাসপাতাল ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। একেকটি হাসপাতাল চার থেকে পাঁচশ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর একসপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর সারাদেশে শুরু হবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম।

 

Related Posts