নিজস্ব প্রতিবেদক
আবারো বাড়ছে সোনার দাম। মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট), মজুরিসহ সোনার অলংকারের দাম নির্ধারণের বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। চলতি মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে। সেটি হলে ২২ ক্যারেট বা ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম প্রায় ৮০ হাজার টাকায় পৌঁছে যাবে।
বর্তমানে দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার অলংকারের দাম ৭২ হাজার ৬৬৬ টাকা। প্রতি গ্রামের দাম ৬ হাজার ২৩০ টাকা। তার সঙ্গে ২৫০ টাকা মজুরি যোগ হবে। মজুরিসহ প্রতি গ্রাম সোনার দাম হয় ৬ হাজার ৪৮০ টাকা। তার ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট ধরলে প্রতি গ্রামের দাম হবে ৬ হাজার ৮০৪ টাকা। এভাবে এক ভরির সোনার অলংকারের দাম দাঁড়াবে ৭৯ হাজার ৩৬১ টাকা।
রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে গত বুধবার জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি এনামুল হক খানের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সাধারণ সভা হয়। এতে সমিতির কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটির নেতা এবং সাধারণ জুয়েলার্স ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। অনেকের আশঙ্কা, ভ্যাট ও মজুরিসহ দাম নির্ধারণ করা হলে ছোট ব্যবসায়ীদের দোকানে ক্রেতারা যাবেন না। তাতে তাঁরা ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
সভায় সোনার অলংকারের সঙ্গে ভ্যাট ও মজুরি যোগ করে পুনরায় দাম নির্ধারণ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া সিদ্ধান্ত হয়েছে সমিতির সদস্যদের জন্য আবাসন প্রকল্প করা হবে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি ভ্যাট হার হ্রাস ও অসাধু ভ্যাট কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর নজরে আনতে কাজ চলবে।
সাধারণ সভায় ভ্যাট, মজুরিসহ দাম নির্ধারণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হলেও শেষ পর্যন্ত সমিতি কোন পথে হাঁটবে, সেটি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। জানতে চাইলে জুয়েলার্স সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন, ‘ভ্যাট, মজুরিসহ দাম নির্ধারণ করলে সোনার দামের চেহারা ভয়ংকর অবস্থায় পৌঁছে যাবে। যদিও সাধারণ সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ীদের প্রায় ৭০ শতাংশ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান ছিল। তারপরও পুরো বিষয়টি নিয়ে আমরা দ্বিধাগ্রস্থ অবস্থায় রয়েছি। জেলা পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন। অনেকের আশঙ্কা, ভ্যাট ও মজুরিসহ দাম নির্ধারণ করা হলে ছোট ব্যবসায়ীদের দোকানে ক্রেতারা যাবেন না। তাতে তাঁরা ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্থ
জানা যায়, ব্যবসায় স্বচ্ছতা আনতে ভ্যাট, মজুরিসহ সোনার অলংকারের দাম নির্ধারণের চিন্তাভাবনা বেশ কিছুদিন ধরেই করছিল জুয়েলার্স সমিতি। চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে সেটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। বিষয়টি নিয়ে সমিতির শীর্ষ নেতৃত্ব দ্রুত এগোলেও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের একটি অংশ বিরোধিতা করেন। তখন ভ্যাট বাবদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রাজস্ব বেশি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ভ্যাটের হার কমানোর দাবি তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন সমিতির নেতারা। সেটি আদায় হলেই ভ্যাট, মজুরিসহ সোনার দাম নির্ধারণের পথে হাঁটবেন তাঁরা। তারপর হঠাৎ করেই সমিতির নেতারা সাধারণ সভায় ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত নেন।