চট্টগ্রাম লিড নিউজ

বন্দরে জিসিবি ছয় টার্মিনালে অপারেটর নিয়োগে কারসাজির আশংকা !

নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম বন্দরের জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) ছয়টি টার্মিনালে কন্টেইনার ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের অপারেটর নিয়োগ নিয়ে কারসাজির আশংকা করা হচ্ছে। মূলত আবারও নিয়োগ পাচ্ছে আগের ৬ প্রতিষ্ঠান।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছিল দরপত্র বিক্রির শেষদিন। ২১টি দরপত্র বিক্রি হয়েছে। জিসিবির ৬ কন্টেইনার বার্থের ৬ অপারেটর প্রতিষ্ঠানের বাইরে টার্মিনাল অপারেটর সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেড, কিউসি ট্রেডিং এবং অন্য দু’টি প্রতিষ্ঠানের নামে দরপত্র কেনা হয়েছে বলে বন্দরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে, নানা রকমের হিসাব-নিকাশ বোঝাপরার পর শেষ পর্যন্ত কতটি দরপত্র জমা হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
বন্দর ব্যবহারকারিরা বলেছেন, এটা আসলে দরপত্রের নামে ‘পাতানো খেলা’, এক ধরনের আই ওয়াশ। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তীতে প্রতিবার দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া যখন শুরু হয় তখন থেকে একটি সিন্ডিকেট বিভিন্ন পর্যায়ে দৌড়ঝাপ, তদবির আরম্ভ করে যাতে কেবলমাত্র তাদের সক্ষমতা মোতাবেক সবকিছু হয়। সেটাই হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারের দরপত্রও প্রতিযোগিতাহীন হচ্ছে। এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললে বলা হয় সরকারি ক্রয় নীতিমালা ( পিপিআর ) অনুসরণে দরপত্র।
দরপত্রের অন্যতম শর্ত হচ্ছে গত ১০ বছরের যে কোন ২ বছরে কমপক্ষে এক লাখ টিইউস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর অভিজ্ঞতা। যে কোন সমুদ্র বন্দরের কথা দরপত্রে থাকলেও কার্যত শর্তটি পূরণের সক্ষমতা কেবলমাত্র চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োাজিতদের রয়েছে। অর্থাৎ বর্তমান ৬ অপারেটর এবং টার্মিনাল অপারেটর সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেডই কেবল এই সক্ষমতাসম্পন্ন।
বন্দরের এক স্টিভিডোর প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, দরপত্রের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা চাওয়া হয় সাধারণত। কিন্তু সেসব দরপত্র এবং কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর দরপত্র গুণগতভাবে একই নয়।সাইফপাওয়ারটেক লিমিটেড সবচেয়ে দক্ষতায় টার্মিনাল পরিচালনা করছে। তাদের তো কোন অভিজ্ঞতা ছিল না। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কোন টেকনিক্যাল কাজ নয় যে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জনকারি প্রতিষ্ঠান দরকার। কারণ, কাজ করেন সেই একই শ্রমিক, কর্মচারিরাই। অপারেটর এসব কর্মি সরবরাহ করে। আর এই কর্মিদের ওপর নির্ভরশীল বন্দরের উৎপাদনশীলতা। তিনি বলেন, বন্দরের লাইসেন্সধারী সব স্টিভিডোরিং প্রতিষ্ঠানের দরপত্রে অংশগ্রহণ উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অযৌক্তিক শর্তারোপে দরপত্র প্রতিযোগিতাহীন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে, হ্যান্ডলিং খরচ বৃদ্ধি পায়।
বন্দরের ৬, ৯, ১০, ১১, ১২ এবং ১৩ নম্বর কন্টেইনার বার্থে ৫ বছর কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য অপারেটর নিয়োগের ঐ দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে দ্বি-খাম পদ্ধতিতে। প্রথমে খোলা হবে টেকনিক্যাল অফার। মূল্যায়ন কমিটি সবকিছু ঠিকঠাক পেলে পরবর্তীতে ফিনান্সিয়াল অফার খোলা হবে।

Related Posts