রুপন দত্ত – আনোয়ারা প্রতিনিধি
আনোয়ারায় ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফ হত্যার ঘটনায় পাঁচ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের পিতা মো. আব্দুল্লাহ বাদী হয়ে আনোয়ারা থানায় এই মামলা দায়ের করেন।আসামীরা হলেন দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের উপ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক নয়ন সরকার (২৯),পূর্ব ডুমুরিয়া গ্রামের এম এ হাশেমের ছেলে রাকিব (২৫), পূর্ব রদুরা গ্রামের আলী আকবরের ছেলে মহিউদ্দিন মানিক(৩৩), পটিয়ার ধলঘাট এলাকার অমর নন্দীর ছেলে অংকন নন্দী(২০)।অভিযুক্তরা সবাই পলাতক রয়েছে।এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। এদিকে গতকাল নিহত আশরাফ এর লাশ চমেক হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে নিজ বাড়িতে নামাজে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় কান্নার রোল।তার মা আহাজারি করছেন। তার দুই বোন বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। নিস্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিহতের মা অংকুর বেগম বলেন, আমার ছেলে চুল কাটার জন্য একশ টাকা চেয়েছিল, আমি টাকা দিয়েছিলাম, আমার ছেলে আর কোনদিন টাকা চাইবেনা।
জানা গেছে আসামি নয়ন সরকার আর নিহত আশরাফ দুজনেই দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের অনুসারী। একসময় তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল।কিন্তু গত এক বছর ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।কয়েক মাস আগেও তাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।
গতকাল দূপুরে উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী আশরাফ এর মৃত্যুতে তার সহকর্মীরা আনোয়ারা উপজেলার জয়কালী বাজার ও প্রধান আসামি নয়ন সরকার এর বাড়ির পাশে সিংহরা রাস্তার মাথায় হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় ইট পাটকেল নিক্ষেপ ও দোকানপাট ভাংচুরের চেষ্টা করলে আনোয়ারা সার্কেল এর এএসপি হুমায়ুন কবির এর নেতৃত্বে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেন।এই সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াছিন হিরু, সাবেক মন্ত্রী মরহুম আক্তারুজ্জামান চৌধুরীর ব্যাক্তিগত সহকারী বোরহান উদ্দিন চৌধুরী মুরাদ উপস্থিত ছিলেন।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম দিদারুল ইসলাম সিকদার বলেন,আশরাফ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় তার পিতা পরিবারের পক্ষে লিখিত অভিযোগ করেছেন।আমরা অভিযোগটি মামলা হিসাবে নথিভুক্ত করছি।আসামীদেরকে খুব দ্রুত গ্রেফতার এর চেষ্টা চলছে।
এই ব্যাপারে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, এটা তাদের সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত দন্ধ।দলীয় কোন কোন্দল নয়।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে, যেকোনো সময় সিদ্ধান্ত আসতে পারে।