নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রাম শহরের এক সময়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বেলাল ড্রাইভারের প্রথম স্ত্রীর সন্তান হোসেনেরখীলের ইউসুফ হোসেনের মাধ্যমে দাঁতমারা,হোসেনেরখীল ও ইসলামপুরে ইয়াবা ট্যাবলেট এর বিস্তার ঘটেছে। দাঁতমারার ইয়াবা জগতের অঘোষিত রাজা ইউসুফ। তাই এলাকায় তাকে ইয়াবা ইউসুফ হিসেবে সবাই চিনে। এদিকে তার খুঁটির জোর কোথায় এব্যাপারে তদন্ত প্রতিবেদনটি তৈরী করতে গিয়ে দেখা গেছে ইয়াবা ব্যবসায় উত্তর ফটিকছড়ির আন্ডারগ্রাউন্ড এর রাজা হিসেবে খ্যাত কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে। তদন্ত শেষে আগামী পর্বে তাদের নাম পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে। জানাগেছে ইউসুফ একসময় এশিয়ার বৃহত্তম দাঁতমারা রাবার বাগানের চিহ্নিত চোর ছিলো। রাবার চুরি আর মাদক ব্যবসা করে সে এখন হয়েছেন অনেক সম্পদ ও টাকার মালিক। ইসলামপুর ও হোসেনেরখীলে বিগত প্রায় ৩ বছর ধরে ইয়াবা ব্যবসা করে পরিচিতি পেয়েছেন ইয়াবা ইউসুফ হিসেবে। এর বিরুদ্ধে রয়েছে নারী পাচার,রাবার চুরিসহ অর্ধডজন মামলা। পুলিশ সুত্রে জানাগেছে ইউসুফ নারী পাচার মামলায় দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলো। জামিনে বেরিয়ে এসে কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের কিছু পুলিশ এর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে ভিন্ন কৌশলে জমজমাট ভাবে ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে। সে তার টয়োটা প্রোবক্স একটি প্রাইভেট কারকে ভাড়ায় চালিত বলে প্রচার করে মূলত উক্ত কার দিয়ে কুমিল্লাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা চালান পাচার করে থাকে । তবে পুলিশের বিশেষ অভিযানের মাঝেও সুচতুর ইউসুফ এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে। এলাকাবাসী সুত্রে জানাগেছে, ইউসুফ এর বিরুদ্ধে হঠাৎ সংবাদপত্রে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে লেখালেখি হবে তা এলাকার কারও ভাবনায় ছিলোনা। কারন সে খুবই প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী।
একসময় ইউসুফ আনোয়ারা বেগমের ইয়াবার চালান নিজেই মোটর সাইকেল চালিয়ে বিভিন্ন স্পটে সাপ্লাই দিতেন কিন্তু একসময় ক্রসফায়ারের ভয়ে অনেক মাদক ব্যবসায়ী এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সে নিজে একা ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে আনোয়ারার সাথে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটে বলে জানান। ইউসুফ কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের টাকার মেশিন হিসেবে পরিচিত বলে জানাগেছে। যার ফলে সে এতোদিন বিনা বাধায় ইয়াবা চালান ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ে দিয়ে বিনা বাধায় বিভিন্নস্থানে সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছে। এদিকে প্রতিদিন রাতে হোসেনেরখীলস্থ ইউসুফের বাড়িতে ৪/৫টি মোটর সাইকেল আসা যাওয়া করে থাকে। ধারনা করা হচ্ছে ইউসুফের সাঙ্গপাঙ্গরা তার ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এক সময় ইউসুফের বাবা বেলাল ড্রাইভার চট্টগ্রাম শহরে মাদক ব্যবসা করে হোসেনেরখীল এলাকায় এসে রাবার বাগানের সরকারি জমি দখল করে ঘরবাড়ি তৈরি করে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে নিরাপদ স্থান হিসেবে এই এলাকায় আবাস গড়ে তুলে। কিন্তু ছেলে ইউসুফও বাবার মতোই মাদক ব্যবসা করে বাবার পথেই হাঁটছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। হোসেনেরখীল ও ইসলামপুরের সাধারণ নিরীহ বাসিন্দারা এই মাদক ব্যবসার নির্মুল চায়। কারন মাদক এর চোবলের কারনে পাড়ায় অধিকাংশ সংসারে পারিবারিক কলহ লেগেই আছে।সম্প্রতি ইয়াবার কারনে বাগানবাজার এলাকায় স্বামী তার স্ত্রীকে গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। যার ফলে এলাকাবাসীর অভিমত সামান্য কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীর জন্য তাদের গ্রামের দুর্নাম হোক সেটা তারা চায় না। এদিকে বিভিন্ন সংবাদ পত্র মাদকের বিরুদ্ধে সংবাদ পরিবেশনের পর থেকে ইউসুফের মাদক ব্যাবসা, সরকারী বাগানের রাবার চুরি,নারীপাচারসহ বিভিন্ন অপকর্মগুলো সামনে আসতে শুরু করে। এতদিন তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। যারাই তার বিরুদ্ধে গিয়েছে তাদের জীবন তছনছ করে দেয়া হয়েছে। এমনকি ইউসুফকে চুরি করা রাবারসহ বাগান কতৃপক্ষ হাতেনাতে আটকের সময় সে বাগানের আনসারকে আহত করে পালিয়ে যায়। এব্যাপারে বাগান কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ভয়ে অভিযোগ করতে পারেনি উল্টো চোরাই রাবারের তথ্য দেওয়াতে স্থানীয় এক টেপারকে( স্থায়ী) সে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ আছে। এদিকে পুলিশ ইউসুফকে খুজতে তার বাড়িতে হানা দেয় বলে জানান পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আতাউল হক চৌধূরী। পুলিশ তাকে যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করবে বলে জানান।
ইউসুফের মোবাইলে একাধিকবার কল করেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
দাঁতমারার মাদক সম্রাট ইয়াবা ইউসুফের খুঁটির জোর কোথায়?
