নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘সোয়াত’ জাহাজ প্রতিরোধের স্মৃতিকে নতুন প্রজন্মের মধ্যে জাগরূক রাখতে ১৭ নম্বর জেটিঘাট এলাকায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ। এ উদ্যোগে পরিষদকে সর্বাত্মক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ।
১৯৭১ সালের মার্চে নিরস্ত্র বাঙালি নিধনের জন্য পশ্চিমা হানাদার বাহিনী অস্ত্র, গোলাবারুদ ভর্তি সোয়াত জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের ১৭ নম্বর জেটিঘাট এলাকায় নোঙর করেছিল। ২৪ মার্চ সেই জাহাজ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ খালাস করা হবে- এমন পরিকল্পনার খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে লাখো জনতা সেদিন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
জনপ্রতিরোধের মুখে পড়ে সেদিন সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ খালাস বন্ধ হয়ে যায়।
বুধবার (২৪ মার্চ) সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে নিউমুরিং এমপিবি গেইটের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সভায় নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সোয়াত জাহাজের অস্ত্র খালাস প্রতিরোধ করতে সেদিন লাখো বাঙালি জেটিঘাট থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে।
সেদিন জেটিঘাটে প্রতিরোধকারী অনেক নিরস্ত্র বাঙালি পাকিস্তানি সেনার হাতে নিহত হন। অনেকেই গুরুতর আহত হন। অস্ত্র খালাস করতে যাওয়ার সময় জিয়াউর রহমান ও তার বাহিনী আগ্রাবাদ এলাকায় জনরোষের মুখে পড়ে। এই সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধে সফলতার মধ্য দিয়ে সেদিন রচিত হয়েছিল অনন্য এক বিজয়। যা পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জনে প্রেরণা জুগিয়েছে। সেদিনের সেই স্মৃতি প্রজন্মের কাছে জাগরূক করে রাখার লক্ষ্যে ১৭ নম্বর জেটিঘাটে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে। তা ছাড়া প্রয়োজনীয় সার্বিক সহায়তা নগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
তিনি আয়োজক পরিষদকে সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধকারীদের সাক্ষ্য, প্রমাণ ও বর্ণনা নিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে বীর বাঙালি বর্বর পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে মহান বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। এ বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এ সুবর্ণজয়ন্তীতে সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ উদ্যোগে সারথি হতে পেরে নগর আওয়ামী লীগ গৌরববোধ করছে।
সোয়াত জাহাজ প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হারুণ উর রশিদের সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা এসএম আবু তাহেরের সঞ্চালনায় আলোচনায় সভায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ সহ-সভাপতি শফর আলী, নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য রোটারিয়ান মো. ইলিয়াস, কামরুল হাসান বুলু,বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম শামসুল আলম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান নাছির উদ্দিন, আকবর হোসেন কবি, মো. ইলিয়াছ, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক মানিক, মো. আসলাম, মো. হাসান মুরাদ, মো. হাসান, মো. নুরুল আলম, মো. সেলিম, যুবলীগ নেতা মো. মাইনুদ্দিন, আবদুল হাকিম মেম্বার, শারমিন সুলতানা ফারুক, মো.আবু বক্কর সিদ্দিক, মো. মামুনুজ্জামান, রুমানা আক্তার রুমা, মো. জাবের, মো. ইলিয়াছ, মো.হারুণ, মো আবদুর রউফ, সেলিম আফজল, মো.সালাউদ্দিন, আজাদ হোসেন রাসেল, জাবেদ হোসেন, মো.জাহেদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।