কলকাতা প্রতিনিধি
ক্ষমতাসীন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ প্রধান দিলীপ ঘোষকে নির্বাচনী প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোনো প্রচার কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না দিলীপ ঘোষ। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার জন্য তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, সম্প্রতি শীতলখুচি নিয়ে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে কমিশনের এ ঘোষণা শোনার পরই মন্তব্য করতে ভুলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘নববর্ষ মানে তো আসলে ছুটির দিন। এ নিষেধাজ্ঞার মানে কী! ভালোই হয়েছে। উনি মন্ডা মিঠাই খাবেন’। খবর আনন্দবাজারের
গত শনিবার চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণের দিন কোচবিহারের শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় চারজনের। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয় রাজ্য রাজনীতি। এর পরের দিন রোববার বরাহনগরে একটি নির্বাচনী জনসভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে রাজনীতি করার দিন চলে গেছে। ভয় উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিচ্ছেন। ১৭ তারিখ সকালেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিন। বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না। আমরা আছি। আর যদি বাড়াবাড়ি করে, শীতলখুচিতে দেখেছেন কী হয়েছে। জায়গায় জায়গায় শীতলখুচি হবে’।
এরপর গত বুধবার ওই বক্তব্যের জন্য নির্বাচন কমিশন দিলীপকে নোটিশও পাঠায়। বুধবার তার জবাবও দেন দিলীপ। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দিলীপের জবাবে সন্তুষ্ট না হয়েই এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এর আগে একই রকম ব্যবস্থা মমতার বিরুদ্ধেও নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোনো রকম নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারেননি মমতা। এর প্রতিবাদে কলকাতায় গাঁধী মূর্তির নিচে ধরনায় বসেন মমতা। সেই দিন থেকেই দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলে তৃণমূল। এরপরে মঙ্গলবার থেকে রাজ্য বিজেপির সাবেক সভাপতি তথা হাবড়ার প্রার্থী রাহুল সিংহের প্রচারে ৪৮ ঘণ্টার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। বৃহস্পতিবার সেই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হতে না হতেই বর্তমান সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রচারে নিষিদ্ধ করল কমিশন।
এদিকে, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুকেও এ দিন নোটিশ পাঠিয়েছে কমিশন। শীতলখুচি নিয়ে তিনিও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ।