কলকাতা প্রতিনিধি
একদিনে নয়,পূর্বঘোষিত চার দফাতেই হবে পশ্চিমবঙ্গের ভোট। এটা নিশ্চিত হয়ে গেল। একাধিক রাজনৈতিক দল চার দফাতেই ভোটের পক্ষে।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতজুড়ে। এই আবহে পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয় পশ্চিমবঙ্গেও। এরই মাঝে রাজ্যে বাকি চার দফা বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে চিন্তায় রয়েছে প্রশাসন এবং বিশেষজ্ঞরা। তবে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, বাকি দফার ভোটও স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রহণ করা হবে। এতে বাকি আসনগুলোর ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটল।
করোনা সুরক্ষা বজায় রেখে ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিভি রাধাকৃষ্ণণের ডিভিশন বেঞ্চ। এ নিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে কমিশনকে। সে রিপোর্টে কমিশনকে জানাতে হবে, কীভাবে করোনাবিধি মেনে পঞ্চম দফার ভোট পরিচালনা করা হয়েছে। আগামী সোমবার এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে কমিশনকে।
করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে গোটা রাজ্যে। কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় বিশেষজ্ঞরা। তবে এর মাঝেও করোনাবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে ভোটের প্রচার।
এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় হাইকোর্টে। এ-সংক্রান্ত মামলাগুলোর শুনানি চলাকালে গত মঙ্গলবারই বিচারপতি রাধাকৃষ্ণণের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানান, করোনাবিধি মেনে যাতে নির্বাচনী প্রচার চলে, তা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। মাস্ক পরা ও দূরত্ববিধি মেনে চলার মতো বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
এরপরই কভিডের এই বাড়বাড়ন্তের মধ্যে কীভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনার জন্য শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। এতে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত মোর্চাসহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেন কমিশনের কর্মকর্তারা।
বৈঠকে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই বলেছে, কভিডের সংক্রমণ রুখতে কমিশনের নেওয়া পদক্ষেপে তাদের আপত্তি নেই। তবে কভিডের সংক্রমণ রুখতে তৃণমূল ভোটের দফা কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু কমিশন এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
ইতোমধ্যেই প্রচারে বড় জমায়েত করা থেকে বিরত থাকার কথা ঘোষণা করেছে সংযুক্ত মোর্চা। এ বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ভোটের দফা কমানো হলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। মানুষের জীবন রক্ষায় তারা সব প্রস্তাবে রাজি। অন্যদিকে, বিজেপির পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, কভিড পরিস্থিতিতে মানুষের স্বার্থে কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই তারা মেনে নেবে।
করোনা সংক্রমণ রুখতে শেষ তিন দফার (ষষ্ঠ, সপ্তম এবং অষ্টম) ভোট একসঙ্গে করার প্রস্তাব দেওয়া হয় তৃণমূলের তরফে। দলের প্রতিনিধি পার্থ চট্টোপাধ্যায় বৈঠক শেষে বলেন, শেষ তিন দফার ভোট গ্রহণ যদি এক দফায় করা হতো, তবে মানুষের জীবন অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকবে বলে আমরা মনে করি। তাই কভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমরা কমিশনকে শেষ তিন দফার ভোট একদিনে করার আর্জি জানিয়েছি। তবে এ দাবিতে কমিশনের অনুমোদন মিলেছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু বলেননি পার্থ।