কলকাতা প্রতিনিধি
আগামী ১৩ মে ঈদের দিন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার দুই বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে দেশটি নির্বাচন কমিশন। এতে কমিশন ও বিজেপির উপর চটেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও তণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা ব্যানার্জি।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আগামী ২৬ এপ্রিল সপ্তম দফায় ওই দুইটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ এপ্রিল সামশেরগঞ্জের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মহম্মদ রেজাউল হক মারা যায়।
এর একদিন পর ১৬ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় জঙ্গিপুরের সংযুক্ত মোর্চা সমর্থিত আরএসপি প্রার্থী প্রদীপ নন্দীর। ফলে দুই কেন্দ্রেই ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। সোমবারই নির্বাচন কমিশন জানায় আগামী ১৩ মে ওই দুইটি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া হবে। রাজ্যের ২৯৪ টি আসনে মোট আট দফায় নির্বাচন হবে। ২৯ এপ্রিল শেষ দফার ভোটগ্রহণ। ২ মে ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হবে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে মুর্শিদাবাদ ভগবানগোলার জনসভা থেকে এই ইস্যুতে মুখ খুললেন মমতা। তিনি বলেন ‘এখানে দুইজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় তাদের ভোটটা ১৩ তারিখ করে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু ঐদিন নাকি ঈদ আছে। আমি জানি না নির্বাচন কমিশন নিশ্চয়ই ক্যালেন্ডারে ঈদের ছুটি টা দেখতে ভুলে গেছে, বা দেখে নি। কিন্তু আমরা মনে করি পূজা বা ঈদের দিনগুলো মাথায় রেখে কাজ করা উচিত। তবুও আমি বলব আপনি ঈদের দিনেই ভোট দিন, আর দুর্গা পূজার দিন ভোট দিন। যার ভোট দেওয়ার সে ঠিকই ভোট দেবে।
এইভাবে আপনি রুখে দিতে পারবেন না। ’
মুসলিম অধ্যুষিত এই দুই কেন্দ্রে ঈদের দিন ভোটগ্রহণ নিয়ে সরব হয়েছে ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন’ (এআইএমআইএম) ও বেঙ্গল ইমামস অ্যাসোসিয়েশন। দুই দলের তরফেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে ভোটের দিন পরিবর্তন করার আর্জি জানানো হয়েছে।
দিল্লির বিজেপি সরকারকে দাঙ্গাবাজ, পকেটমারের সরকার বলে অভিহিত করে মমতা বলেন ‘বুধবার রামনবমী আছে, রমজান মাস চলছে। সকলেই শান্তিপূর্ণ ভাবে তা পালন করবেন। বিজেপির পরিকল্পনা আছে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগিয়ে দেওয়ার। কিন্তু আমাদের দেখতে হবে তা যেন কোনভাবেই সফল না হয়। ’
ফারাক্কায় ড্রেজিং নিয়েও কেন্দ্রকে নিশানা করে মমতা বলেন ‘গঙ্গার ভাঙন সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখন বাংলাদেশকে পানি দেওয়া হয়েছিল, তখন ফারাক্কা নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ একটা চুক্তি হয়েছিল। তখন ভারত সরকার বলেছিল ড্রেজিং করা হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই টাকা দেওয়া হয়নি। ফরাক্কার পানি অনেক কমে গেছে, অনেক শুকিয়ে গেছে। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই, ফারাক্কা বেশি পানি জমলে একদিকে বিহারের বন্যা হয়, অন্যদিকে বাংলাতেও বন্যা হয়। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ জানাব যে শিগগির ফারাক্কায় ড্রেজিং’এর কাজ শুরু করা হয়। ’