সিনিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সাবওয়ে স্টেশনে পাইপ বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করা বাংলাদেশি অভিবাসী আকায়েদ উল্লাহর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ম্যানহাটন ফেডারেল আদালত আজ বৃহস্পতিবার তাঁকে ওই দণ্ড দেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসির এক খবরে জানানো হয়, বর্তমানে ৩১ বছর বয়সী আকায়েদ উল্লাহ ২০১৭ সালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নামে ওই হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। তাঁর সাজা ঘোষণার সময় ম্যানহাটন ফেডারেল আদালতের বিচারক রিচার্ড জে সুলিভান বলেন, ‘তাঁর যাবজ্জীবন সাজা হওয়াই যথার্থ। তাঁর অপরাধ প্রকৃতপক্ষেই বর্বরোচিত ও জঘন্য।
সাজা ঘোষণার আগে অবশ্য আকায়েদ উল্লাহ তাঁর অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত, আমি যা করেছি, তা ভুল ছিল। আমি আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে বলছি, আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমি নিরপরাধ মানুষের ক্ষতি করাকে সমর্থন করি না।’
গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার, গণপরিবহন ব্যবস্থায় বোমার বিস্ফোরণ এবং জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসকে সহযোগিতার অভিযোগে ২০১৮ সালেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন আকায়েদ। মামলার শুনানির সময় সরকারি কৌঁসুলিরা আকায়েদ উল্লাহর যাবজ্জীবন সাজাই দাবি করেছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল, আকায়েদ জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের নামে পূর্বপরিকল্পিত ওই হামলা চালিয়েছিলেন।
তবে আকায়েদ উল্লাহর আইনজীবী অ্যামি গালিসিও বলেছেন, তাঁর মক্কেলের ৩৫ বছরের বেশি কারাবাস হওয়া উচিত নয়। তিনি বলেন, আকায়েদ ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের ওই হামলার আগে শান্তিপূর্ণভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেছেন। ওই হামলার জন্য আইনজীবী অ্যামি গালিসিও ‘ব্যক্তিগত সংকটকে’ দায়ী করেছেন, যা আকায়েদকে একাকী করে দিয়েছিল, হতাশ, ঝুঁকিপূর্ণ ও আত্মঘাতী করে তুলেছিল।
নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর সকাল ছয়টায় আকায়েদ উল্লাহ তাঁর ব্রুকলিনের বাসা থেকে ঘরে তৈরি পাইপবোমা নিয়ে বের হন। তিনি নিউইয়র্কের এইটিনথ অ্যাভিনিউ সাবওয়ে স্টেশনের উদ্দেশে রওনা হন। পথে তিনি তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে পোস্ট দেন, ‘হায় ট্রাম্প, আপনি নিজের জাতিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
আকায়েদ উল্লাহ ভূগর্ভস্থ টানেল ধরে টাইমস স্কয়ারের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। সাবওয়ে স্টেশনে পৌঁছে আকায়েদ তাঁর বুকে বাঁধা পাইপবোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বোমাটি পুরোপুরি ফাটেনি। এতে তিনিসহ চার ব্যক্তি আহত হন।
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তান আকায়েদ উল্লাহ পরিবারের সঙ্গে ব্রুকলিনের ফ্ল্যাটল্যান্ডস এলাকায় থাকতেন। তিনি বৈদ্যুতিক সামগ্রীর দোকানে কাজ করতেন।