সিনিউজ ডেস্ক
যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকজন রোগী পালিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার সকাল থেকে রোববার দুপুরের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে দুজন রোগী পালিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে রোগী পালিয়েছেন ১০ জন।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনও দুজন রোগীর পালানোর বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রোগী পালানোর কথা শুনে আমি রোববার সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলাম। হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা হয়েছে। হাসপাতালে দেওয়া নাম ঠিকানা ঠিক থাকলে পালিয়ে যাওয়া রোগীদের খুঁজে বের করা সম্ভব। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের নার্স ও কর্মচারীদের অবহেলার কারণে তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ব্রাদার তারক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত শনিবার সকাল ১০টা ৫৭ মিনিটে ভারত ফেরত কিছু রোগী ভর্তি করা হয়। এরপর রোববারও রোগী আসেন। সব মিলিয়ে দুইদিনে দশজন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের সবাইকে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় করোনা ওয়ার্ডে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের ভর্তি রেজিস্টার মতে, ভর্তি রোগীরা হলেন- যশোর শহরের বিমান অফিস মোড়ের আবুল কাসেমের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৭), খালধার রোডের বিশ্বনাথের স্ত্রী মালা দত্ত (৫০), সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (১৯), একই গ্রামের একরামের স্ত্রী রোমা (৩০), প্রতাপকাঠি গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে মমিন, রামকান্তপুর গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নাসিমা বেগম (৫০), বাঘারপাড়া উপজেলার রায়পুর গ্রামের ফজর আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪৫), ঝিনাইদাহ জেলার কালীগঞ্জের মনোতষের স্ত্রী শেফালি রানী, খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার রামরাইল গ্রামের আহম্মদের সানার ছেলে আমিরুল সানা ও একই জেলার রুপসা এলাকার শের আলীর ছেলে সোহেল (১৭)।
করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স লাবনী বিশ্বাস বলেন, ভারত থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসা ১০ জন ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। কিন্তু আজ সকালের পর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ও বক্ষব্যাধির কয়েকজন চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী যদি কোনো পরিবারে থাকে তার মাধ্যমে প্রথমে তার পরিবার এবং আশপাশের লোকজনও আক্রান্ত হতে পারেন। করোনার ভারতীয় ধরন উদ্বেগ তৈরি করেছে। ফলে পালিয়ে যাওয়া রোগীরা যদি ভারতীয় ধরনের বাহক হন তাহলে তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলিপ কুমার রায় বলেন, ভারত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগী হাসপাতালে আনা হলে তা পুলিশ স্কট করে দিয়ে যাবে। একইসাথে তাদের পাসপোর্ট পুলিশ হাসপাতালে জমা করবে। কিন্তু তার কোনোটাই করা হয়নি। কোনো রোগী যাতে পালাতে না পারে সেজন্য বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার বিষয়ে আমি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলব।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা রোগী পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের কিছু জানায়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়
সূত্রঃ আমাদের সময়