কলকাতা প্রতিনিধি
রাজ্যে এ বার কার্যত লকডাউন। শনিবার থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত, ১৫ দিনের জন্য জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দফতরগুলি ছাড়া, সমস্ত সরকারি, বেসরকারি দফতর বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করল নবান্ন। লোকাল ট্রেন আগেই বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এ বার বাস এবং মেট্রো,এবং ফেরি পরিষেবাও সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ট্যাক্সি এবং অটোও চলাচল করবে না। আগের মতোই বন্ধ থাকবে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আগের বার, লকডাউনেও নানা অজুহাতে বাইরে বেরোতে দেখা যেত সাধারণ মানুষকে। তা রুখতে আগামী ১৫ দিন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে পর দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত বাইরে বেরনো নিষিদ্ধ করেছে রাজ্য। চলবে না ব্যক্তিগত গাড়িও।
এই মুহূর্তে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের উপরেই ঘোরাফেরা করছে। দৈনিক মৃত্যুও ১০০-র উপরেই রয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে আরও দু’সপ্তাহের জন্য কড়াকড়ি চালু করল রাজ্য সরকার। রবিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে তার ঘোষণা করেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত। সেই অনুযায়ীই সকলকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। নইলে মহামারি আইনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
এ দিন রাজ্য সরকার যে ঘোষণা করেছে, সেই অনুযায়ী, স্বাস্থ্য, আদালত, বিদ্যুৎ, পানীয় জল, সংবাদমাধ্যম, সাফাই, কারাগার, পেট্রোল পাম্প, গাড়ির যন্ত্রাংশের মতো জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী পরিষেবাই একমাত্র চালু থাকবে। এ ছাড়া বাকি সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি দফতর বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে শপিং মল, স্পা, সিনেমা হল, শরীরচর্চা কেন্দ্র, সুইমিং পুলও। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মিষ্টি ও মাংসের দোকান। গয়না ও শাড়ির দোকান খোলা থাকবে দুপুর ১২টা থেকে ৩টে পর্যন্ত।
রাজ্য সরকার আরও জানিয়েছে, সৎকারে ২০ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। বিয়েবাড়িতে জমায়েত করতে পারবেন না ৫০ জনের বেশি। ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে ২টো পর্যন্ত। খোলা থাকবে এটিএম। মুদিখানা এবং বাজার খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত। হোটেল, রেস্তরাঁ আগের মতোই বন্ধ থাকবে। তবে খাবার এবং পণ্য বাড়িতে সরবরাহ করা যাবে। সমস্ত ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সমাবেশ বন্ধ থাকবে। ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে খুলে রাখা যাবে চা বাগান। বন্ধ থাকবে শিল্প-কারখানা। ৩০ শতাংশ কর্মী নিয়ে চালু থাকবে চটকল। চালু থাকবে ই-কমার্সও।