নিজস্ব প্রতিবেদক
সারাদেশের ন্যায় আগামী ৫ জুন শনিবার থেকে ১৯ জুন শনিবার পর্যন্ত চট্টগ্রামেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্টিত হবে দুই সপ্তাহ ব্যাপী জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০২১। ৫ জুন শনিবার সকাল ৮টায় আন্দরকিল্লা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জেলা পর্যায়ের জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর। ঐ সময়ে চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায় ২’শ ইউনিয়নের ৬’শ ওয়ার্ড, ১৫টি স্থায়ী কেন্দ্র, ১৫টি ভ্রাম্যমান কেন্দ্র ও ৪ হাজার ৮’শ অস্থায়ী কেন্দ্রে মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার ৫০৪ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬-১১ মাস বয়সী ৮৯ হাজার ৪৩৯ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (১ লক্ষ আই.ইউ) ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ৭ লাখ ১ হাজার ৬৫ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল (২ লক্ষ আই.ইউ) খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। এ ক্যাম্পেইন সফল করতে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করেছে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়। আগামী ৫ জুন শনিবার থেকে ১৯ জুন শনিবার পর্যন্ত শুক্রবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উপজেলাগুলোতে ৫১ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ১৫৬ জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, ৫৫৭ জন স্বাস্থ্য সহকারী, ৬৮৬ জন পঃ পঃ সহকারী, ১৫৩ জন পঃ পঃ পরিদর্শক, ৯ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, ১৫ জন স্যানিটারী ইন্সপেক্টর, ৫১৭ জন সিএইচসিপি ও ৮৪ জন স্যাকমো নিয়োজিত থাকবে। যে সব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সপ্তাহে দুই দিন ইপিআই কার্যক্রম চলমান রয়েছে সেখানে ৪ দিন ও ইপিআই কার্যক্রম নেই এমন কেন্দ্রগুলোতে শিশুদেরকে সপ্তাহে ৬ দিন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত জেলা পর্যায়ের সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এ তথ্য জানান। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার, এমও সিএস ডা. মোঃ ওয়াজেদ চৌধুরী অভি ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡বধায়ক সুজন বড়–য়া সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশন কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের অধীন স্বাস্থ্য অধিদফতরের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্টান ও পুষ্টি সেবার বাস্তবায়নে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় কর্মশালার আয়োজন করেন।
সাংবাদিক ওরিয়েন্টেশনে সিভিল সার্জন বলেন, ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারী অনুষ্টিত জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনে ৬-১১ মাস বয়সী মোট ৮৫ হাজার ৮৯ জন শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল যার অর্জিত হার ৯৯ শতাংশ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী মোট ৬ লাখ ৮০ হাজার ৩৯৭ জন শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছিল যার অর্জিত হার ৯৮.৯৮ শতাংশ।
ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের যে কোন ধরণের অপপ্রচার ও গুজব রোধে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তিনটি টিম ও ৩য় একটি টিম ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন মনিটরিং করবেন। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেও এ কার্যক্রম দেখার ব্যবস্থা রয়েছে।
সিভিল সার্জন আরো বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। পরিবারের রান্নায় ভিটাামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারী। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্র্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ খাবার খেতে দিতে হবে। এ কর্মসুচী সফল করতে সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। কোন শিশু যাতে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাসসুল খাওয়ানো থেকে বাদ না পড়ে সে লক্ষ্যে সর্বত্র মাইকিং করে জনগণকে জানান দেয়া হবে। জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রাখতে সরকারী প্রতিষ্টান, জনপ্রতিনিধি, আনসার-ভিডিপি ও এনজিও সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারী কর্মকর্তা, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী শিশুদেরকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত থাকবে। সকলের আন্তরিক সহযোগিতা পেলে এ কর্মসূচী সফল হবে। ###