জাতীয় দেশজুড়ে

ভারতফেরতদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন এখনো কি যৌক্তিক?

 

ভারতফেরত বাংলাদশি পাসপোর্ট যাত্রীদের সীমান্ত এলাকায় ও আশেপাশে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। গত ২৬ এপ্রিল থেকে এ নিয়ম চলে আসছে।
এ নিয়ম যখন চালু করা হয় তখন ভারতের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। দিনে সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ আক্রান্ত হয়েছিল। কিন্ত এখনতো সেই অবস্থা নেই। ভারত ও পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক শনাক্তের হার ২% এর নিচে। গত দুই মাস ধরেই এ অবস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী শনাক্তেড হার এরকমই।
বাংলাদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমন হয়ে গেছে। দিনে ১৫ থেকে ১৬ হাজার শনাক্ত হচ্ছে।
তারপরও কেন কোয়ারেন্টাইন?
এটা শুধু শুধু কষ্ট দেয়া নয়কি? ভারতে যারা এসেছেন তারা চিকিৎসার জন্যই এসেছেন। তাদের হাতে কোন টাকা পয়সা নেই।
কোয়ারেন্টাইন তাদের মরার উপর খাড়ার ঘা নয় কি? কারণ চিকিৎসা করাতে গিয়ে তারা নিঃস্ব,তার উপর কোয়ারেন্টাইনে থাকা খাওয়া খরচ।
বাংলাদেশে সব খোলা ১১ তারিখ থেকে। তাহলে ভারত ফেরতদের কোয়ারেন্টাইনে থাকা কেন? আবার দেশের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও ভারতে আসলে থাকতে হচ্ছে না কোয়ারেন্টাইনে।

মনে হচ্ছে এটা আমলাদেরই কারসাজি। হোটেল মালিকদের লাভবান করতে এ ব্যবস্থা নয় কি?

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের গোলাম জীবন কাদের বিশ্বাস ও তার মা রহিমা বেগম বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে ফিরেছেন । নিয়ম অনুযায়ী তাদের হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে। কিডনি রোগী কাদের বিশ্বাসের খাবারের ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা বিধিনিষেধ দিয়েছেন। সয়াবিন তেলের কোনো খাবার তিনি খেতে পারবেন না। আর তার মা রহিমা বেগম হার্টের রোগী হওয়ায় তারও চিকিৎসকের সংস্পর্শে থাকা দরকার। কিন্তু কোয়ারেন্টাইনে এসে এসবের কিছুই হচ্ছে না।

এদিকে, হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের সেবা দিতে গিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন আবাসিক হোটেলের কর্মীরাও। যশোর ম্যাগপাই হোটেলের ব্যবস্থাপক আশিকুজ্জামান জানালেন, তাদের হোটেলে ২৭ জন কোয়ারেন্টাইনে আছেন। ভারতফেরত এই ব্যক্তিদের তারা শুধু মাস্ক পরেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অন্য কোনো স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা নেই।

যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, ২৬ এপ্রিলের পর ভারত থেকে যারা বাংলাদেশে প্রবেশ করছেন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক। এদের মধ্যে যারা দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত তাদেরকে হাসপাতালে রেফার করা হচ্ছে। বাকিরা হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়া এপ্রিল মাসে বেনাপোল দিয়ে ৩৫ জন করোনা রোগী দেশে ফিরেছেন। তাদের সবাইকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক মো. তমিজুল ইসলাম খান জানিয়েছেন, করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ রোধে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। পাশাপাশি তারা কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিও দেখছেন।

এখন কোয়ারেন্টানের কোন যৌক্তিকতাই নেই। সরকার চাইলে নিজ নিজ জেলার হোটেলে ৪ দিন বা হোম কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করতে পারে তাতে কষ্ট অনেকটা লাঘব হবে!!
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা নেগেটিভ সনস ও টিকা,সনদ নিয়ে গেলে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় না,সেটাওতো করতে পারে সরকার।

 

Related Posts