দীর্ঘ ২০ বছর পর ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করেছে তালেবান। এরপর মঙ্গলবার রাজধানী কাবুলে প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। এতে তালেবানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ।
সংবাদ সম্মেলনের নিয়ে কাশ্মীর বিষয়ে তালেবানের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
এতে মূলত কাশ্মীর বিতর্কে ভারতের ছয় দশকের পুরনো অবস্থানেই সায় দিয়েছে তালেবান। জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, “কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক এবং অভ্যন্তরীণ বিষয়। কাশ্মীরে আমাদের কোনও নজর নেই। ”
স্পষ্টতই এক্ষেত্রে জাবিহুল্লাহ ‘দু’পক্ষ’ বলে ভারত এবং পাকিস্তানকেই বোঝাতে চেয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমরা এখন কারও সঙ্গে শত্রুতার সম্পর্ক তৈরি করতে চাই না। ”
যদিও মোল্লা মুহাম্মদ ওমরের জামানায় একাধিকবার কাশ্মীরে সক্রিয় পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছে তালেবান। এমনকি, ১৯৯৯ সালে ভারতীয় বিমান ছিনতাইকারী জঙ্গিদেরও আশ্রয় দিয়েছিল তারা। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলেরও সমালোচনা করেছিল তালেবান।
প্রায় আড়াই দশক পর আফগানিস্তানে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের পর তালেবান নেতৃত্ব ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষায় সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতের সাংবাদিক বৈঠক এক্ষেত্রে তাদের ‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ বলে মনে করা হচ্ছে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকের একাংশের মতে জাবিহুল্লাহর মন্তব্যে স্পষ্ট, তালেবান আর আফগানিস্তানকে ‘আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর’ তকমা দিতে রাজি নয়।
অতীতে লস্কর-ই-তইবা, লস্কর-ই-জঙ্গভি, জৈশ-ই-মুহাম্মদের মতো পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠীকে কাশ্মীরের নাশকতার জন্য প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র-সাহায্যের অভিযোগ উঠেছে তালেবানের বিরুদ্ধে। চলতি মাসেও কয়েকটি পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, লস্কর জঙ্গিরা তালেবান অধিকৃত এলাকায় শিবির খুলেছে।
তালেবানের তৈরি চেকপোস্টগুলোতেও কাজ করছে তারা। এই পরিস্থিতিতে তালেবান মুখপাত্রের ‘আশ্বাসবাণী’ ভারতকে কিছুটা স্বস্তি দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বরাবরই জাতিসংঘ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীরকে ‘দ্বিপাক্ষিক সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার সম্ভাবনা খারিজ করেছে নয়াদিল্লি।