নিজস্ব প্রতিবেদক
হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির প্রধান ও প্রধান মুফতি আবদুস সালাম চাটগামীর মৃত্যুতে মাদ্রাসার নেতৃত্ব নির্বাচনের বৈঠক মুলতবি করা হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামীর কেন্দ্রভূমি এ কওমি মাদ্রাসার মহাপরিচালকসহ (মুহতামিম) বিভিন্ন শূন্য পদ পূরণে বুধবার শুরা কমিটির বৈঠক চলছিল। তার মধ্যেই ৮২ বছর বয়সী আবদুস সালামের মৃত্যুর খবর আসে।
হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা কমিটির একজন সদস্য জানান, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে মুফতি আবদুস সালামের নামই চূড়ান্ত করা হয়েছিল শুরা সভায়। তার মধ্যেই তার অসুস্থ হয়ে পড়া এবং মৃত্যুর খবর আসে। তিনি ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন না।
হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন নানুপুরী বলেন, “বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি মারা যান। উনি অনেক বড় আলেম ছিলেন। উনার মৃত্যুতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ও দেশের জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”
হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. তাহনিয়া সাবেরা চৌধুরী বলেন, “উনাকে মৃত অবস্থাতেই এখানে আনা হয়েছে। উনার কী ধরনের অসুস্থতা ছিল তা আমরা জানি না।”
তবে হেফাজতে ইসলামের একজন কেন্দ্রীয় বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন আবদুস সালাম।
হাটহাজারী মাদ্রাসা চালাতে ৩ সদস্যের কমিটি, বাবুনগরী ফিরছেন নতুন পদে
শুরার সভায় মাওলানা মো. ইয়াহিয়াকে মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে আবদুস সালামের মৃত্যুর পর আর এসব সিদ্ধান্ত ঘোষণা না করে সভা স্থগিত করা হয়।
গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলামের আমীর ও হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর ১৯ সেপ্টেম্বর শুরা কমিটি বৈঠকে বসেছিল। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে মাদ্রাসা পরিচালনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।
ওই কমিটির তিন সদস্য ছিলেন- মুফতি আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ আহমদ ও মাওলানা মো. ইয়াহিয়া।
তখন জুনাইদ বাবুনগরীকে করা হয় মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক ও শায়খুল হাদিস, যিনি শফীর মৃত্যুর পর হেফাজতের আমির পদে আসেন।
গত ১৯ অগাস্ট অসুস্থ হয়ে মারা যান জুনাইদ বাবুনগরী। তাতে মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক ও শায়খুল হাদিস পদও শূন্য হয়।
শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর পর গত প্রায় এক বছর পরিচালনা কমিটিই মাদ্রাসা পরিচালনা করছিল। মাদ্রাসার বেশ কয়েকটি পদ শূন্য হয়ে পড়ায় নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণে শুরার বৈঠক ডাকা হয়।
গত কয়েকদিন ধরে মাদ্রাসার নেতৃত্ব নির্ধারণ ঘিরে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছিল। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের একাংশ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করে নতুন মহাপরিচালকের পরিবর্তে পরিচালনা প্যানেল গঠনের আহ্বান জানিয়েছিল।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী মাদ্রাসায় নিয়ন্ত্রণের উপর সংগঠনটির নিয়ন্ত্রণ অনেকাংশে নির্ভর করে।
জুনাইদ বাবুনগরীর মৃত্যুর পর হেফাজতের আমীর হয়েছেন তার মামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরী। এর আগে সংগঠনের মহাসচিবের পদ পেয়েছিলেন মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, যিনি হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা কমিটির সদস্য।