দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম কলেজের সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা হোস্টেল। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্র শিবিরের দুই পক্ষের মারামারিতে বন্ধ হয়েছিল চট্টগ্রাম এ ছাত্রাবাস।
কিন্তু হঠাৎ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে হলের বিভিন্ন দরজা ও জানালা ভেঙে অবৈধভাবে সেখানে প্রবেশ করার অভিযোগ উঠে সুভাষ মল্লিক সবুজ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
বিষয়টি চট্টগ্রাম কলেজ কর্তৃপক্ষ অবহিত হলে রোববার (১২ মে) সকালে পুলিশের সহায়তায় দুই হোস্টেলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সেখানে লোহার রড ও লাঠিসোটা উদ্ধার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অর্নব দেব বলেন, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিকভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাত করে আসছে। বর্তমানে অনার্সে ভর্তি চলছে। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থী থেকে একটি খাম বিক্রি বাবদ ১০০ টাকা করে নিচ্ছে। এছাড়া রেজিস্ট্রেশন কার্ড, এডমিট কার্ড নিতে হলে প্রত্যেকটি থেকে ১০০ টাকা করে নিচ্ছেন সভাপতি-সম্পাদক। অথচ শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যেন কোনো চাঁদাবাজি না করা হয়। এই সব নিয়ে কয়েকদিন ধরেই আমরা প্রতিবাদ করে আসছি। প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করেছে। সেখানে আমরা উপস্থিত হতেই আমাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে এমন চাঁদাবাজি তারা দীর্ঘদিন ধরেই করছেন। এমন ঘটনার প্রতিবাদে চকবাজার থানা ও কোর্টে আমরা মামলাও করেছি। ক্যাস্পাসে একটা ভীতিকর পরিবেশ ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে বন্ধ হলে অস্ত্র মওজুদ করছে। সেখানে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেছে।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজির পাশাপাশি নিয়োগ বাণিজ্য, টেম্পোস্টেশন ও টং দোকান থেকেও প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণে চাঁদাবাজি করছে। এমনি সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও কোন ছাড় দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, এসব চাঁদাবাজি করে কলেজ সভাপতি মাহাদুল করিম সাড়ে ৩ কোটি টাকায় একটি বিশাল বাড়ি বানিয়েছেন। তাদের দুই জন এতটাই বেপরোয়া যে, তাদের কাছে সবাই অসহায়। তারা একটি কলেজে কীভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সামান্য ৩ টাকা দামের খাম ১০০ টাকা আদায় করছে! তবে আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। এই কারণে আমাদের সঙ্গে বার বার সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে তারা দুই হলে অবৈধভাবে প্রবেশ করে অস্ত্র মওজুদ করছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেছে।
চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়ে দুই হোস্টেলে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। সেখানে কিছু লাঠিসোটা উদ্ধার করেছি। এসময় হলের ভেতরে কাউকে পাওয়া যায়নি।