নিজস্ব প্রতিবেদক:
১৯৮৯ সালের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানাধীন পাথরঘাটার বাসা থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হয়ে বোমা হামলার শিকার হয়ে মারা যান সপ্তম শ্রেণির ছাত্র উত্তম বিশ্বাস। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ সারাদেশে ১২ জানুয়ারি পূর্ণদিবস ও ১৩ জানুয়ারি অর্ধদিবস হরতাল পালন করে। ২৫ জানুয়ারি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাথরঘাটায় উত্তম বিশ্বাসের বাসায় এসে তার বাবা-মা, ভাইবোনকে সান্তনা দিয়ে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
কথা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। গত শনিবার রাতে প্রধামন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া হয় উপহার। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) বদিউল আলম উপহার প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্টাফ অফিসার টু ডিসি মো. উমর ফারুক, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মাসুদ রানা ও জেলা নাজির মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপহার স্বরুপ নগদ ২০ হাজার টাকা, পরিবারের সকল সদস্যের জন্য খাদ্যসামগ্রী, বস্ত্র সামগ্রী (শার্ট, লুঙ্গি, শাড়ী, থ্রি পিস, কম্বল) এবং স্কুলগামী তিন শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়।
স্টাফ অফিসার টু ডিসি মো. উমর ফারুক বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৩২ বছর আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন। তাঁর নির্দেশে উপহার হস্তান্তর করা হয়। আগামীতে এ পরিবারের সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স বিবেচনা করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার আশ্বস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের জন্য একটি উপযুক্ত বাসস্থানের ব্যবস্থাও করা হবে।
জানা যায়, উত্তম বিশ্বাসের পিতা অমল কান্তি বিশ্বাস পুত্র শোকে ২০০৫ সালে ও মাতা লক্ষী বিশ্বাস ২০১২ সালে মারা যান। নিহত উত্তম বিশ্বাসরা চার ভাইবোন। বড় বোন অলকা বিশ্বাস (৪৫), স্বামী অনুপ কুমার মজুমদার। তিনি সিটি কর্পোরেশনের ২৩ নং ওয়ার্ডের ইপিআই কর্মী (অস্থায়ী)। তার একমাত্র ছেলে অমৃত দ্যোতি মজুমদার ১০ম শ্রেণীতে পড়ছে। ২য় বোন সুলেখা বিশ্বাস (৩৬) স্বামী পরিত্যক্তা। তাঁর দুটি বেকার সন্তান আছে। উত্তম বিশ্বাসের দু’ভাইয়ের মধ্যে গৌতম বিশ্বাস (৩৪) পেশায় স্যানিটারি মিস্ত্রি। অপর ভাই মনোজ বিশ্বাস (২৮) উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করতেন। পরে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়ে এখন কর্মহীন অবস্থায় আছেন।