ঢাকা অফিস
সৌদি আরব প্রবাসী কামরুল ইসলাম জুয়েলের দায়ের করা মামলায় মডেল ও ‘রান আউট’ সিনেমার নায়িকা রোমানা ইসলাম স্বর্ণাসহ তার মা ও সন্তানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্ত কর্মকর্তার রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডের পরিবর্তে তাদের একদিনের জন্য জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তার এ আদেশ দেন। মামলার বাকি দুই আসামি হলেন রোমানার মা আশরাফি আক্তার শেলী (৫৭) ও রোমানার ছেলে আন্নাফি ইউসুফ ওরফে আনান (২১)।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে মডেল ও অভিনেত্রী রোমানা ইসলাম স্বর্ণাকে গ্রেফতার করে। সৌদি প্রবাসীর দায়ের করা মামলায় রোমানা, তার মা ও রোমানার ছেলের বিরুদ্ধে কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। গ্রেফতার মডেল রোমানা ছিলেন ‘রান আউট’ সিনেমার নায়িকা।
মডেল পরিচয়ে আরও ২৭ জনের সঙ্গে প্রতারণা রোমানার রোমানা ইসলাম স্বর্ণা। নিজেকে কখনো মডেল, কখনো অভিনেত্রী পরিচয় দিতেন। খুলতেন ভিন্ন ভিন্ন ফেসবুক আইডি। আপলোড করতেন রগরগে (আপত্তিকর) সব ছবি। এরপর প্রবাসীদের টার্গেট করে ফ্রেন্ড বানিয়ে গড়ে তুলতেন প্রেমের সম্পর্ক। তারপর কখনো স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ আবার কখনো স্বামীহীন সংসারে আর্থিক অনটনের কথা বলে প্রবাসী ওইসব প্রেমিকদের কাছ থেকে নিতেন টাকা। কৌশলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লিখে নিতেন জায়গা-জমিও। প্রতারিতদের দাবি, ২৭ জনের সঙ্গে এভাবে প্রতারণা করে বিয়ে করে রোমানা হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ঠিক একইভাবে কখনো ফ্ল্যাট কেনা আবার কখনো গাড়ি কেনার নাম করে রোমানা সৌদি প্রবাসী কামরুল ইসলাম জুয়েলের কাছ থেকে এক বছরে বিভিন্ন সময়ে নেন আড়াই কোটি টাকা।
প্রতারিত হওয়া প্রবাসী কামরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, সে আমার সঙ্গে প্রথমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর লালমাটিয়ায় ফ্ল্যাট কেনার নাম করে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা নেয়। আমি দেশে আসার পর আমাকে বাসায় ডাকে। আমি যাই। গেলে তারা আমাকে কিছুটা একটা খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। এরপর আমার খারাপ ছবি তুলে নেয় ও আমার থেকে স্ট্যাম্পে সাইন নিয়ে নেয়। এভাবেই সে আমাকে জোর করে বিয়ে করে। তার মোবাইল, ঘড়ি, গাড়ি আর সবই আমার কিনে দেওয়া। আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে বললেও তা মিথ্যা। তাই আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
এভাবেই বিয়ের নামে প্রতারণা করে রোমানা ২৭ জন প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। পুলিশ বলছে, শুধু রোমানা নয়, ওই পরিবারের প্রতিটি সদস্যই বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে একই প্রক্রিয়ার প্রেম ও বিয়ের সম্পর্কের অভিনয় করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, রোমানা, তার মা, তার ভাই ও ভাইয়ের বউ ও রোমানার ছেলে তারা সবাই এই ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। তিনি বিদেশ থেকে আসার পর বাসায় নিয়ে উলঙ্গ করে তার ছবি তুলে তারা। এরপর টাকা দাবি করে বসে। টাকা না দিলে সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এরকম প্রতারণার অভিযোগ আরও বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।