কলকাতা প্রতিনিধি
আসামের এক যুবক ও দুই রোহিঙ্গা তরুণীকে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের কক্সবাজার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবির থেকে পালানো দুই তরুণী ও ভারতের আসাম রাজ্যের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) রেল স্টেশনের প্রহরার দায়িত্বে থাকা ‘গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ’ (জিআরপি) ও ‘রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স’ (আরপিএফ) পুলিশ।
শনিবার সকালের দিকে এনজিপি স্টেশনে কাঞ্চনগঞ্জা এক্সপ্রেস ট্রেনে তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় ওই তিনজন ধরা পড়েন। গ্রেফতার হওয়া তিনজনের সঙ্গে আরও ব্যক্তির জোগসাজেশ আছে কি না, সেব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ।
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতাগামী কাঞ্চনগঞ্জা এক্সপ্রেস ট্রেনে তল্লাশি চালানোর সময় ওই তিনজনের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের।
এরপরই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রকৃত ঘটনা সামনে আসে।
জানা যায়, গ্রেফতার হওয়া আসামের বদরপুরের যুবকের নাম জাহিরুল ইসলাম, বয়স ২০ বছর। তার সঙ্গেই বাংলাদেশের কক্সবাজারের উদ্বাস্তু শিবির থেকে পলায়ন করা দুই তরুণী ২১ বছর বয়সী রোকিয়া ও ২০ বছর বয়সী আজিদার যোগাযোগ ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকেই তাদের একে অপরের পরিচয় হয়। এরপর কলকাতায় কাজের লোভ দেখিয়ে দালাল মারফত ওই দুই রোহিঙ্গা তরুণীকে অবৈধভাবে বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের আসামে আনা হয়। আসামেই ওই দুই তরুণীর ভুয়া পরিচয়পত্রসহ সব নথিও তৈরিতে জাহিরুল সহায়তা করে বলে অভিযোগ। এরপর আসাম থেকে নিউ জলপাইগুড়ি হয়ে ট্রেনে করে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই দুই তরুণীকে। কিন্তু তার আগেই রেল পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় ওই তিন জন।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুই রোহিঙ্গা তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তারা উভয়েই কক্সবাজার উদ্বাস্তু শিবির থেকে পালিয়ে এসেছেন। তাদের কাছ থেকে ভুয়া আধার কার্ডও মিলেছে।
অন্যদিকে জেরায় জাহিরুল জানায়, কলকাতার এক ব্যক্তির হাতে ওই দুই তরুণীকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল জাহিরুলের। বিনিময়ে মোটা অর্থের রফাও হয়েছিল।
তবে জাহিরুল আদতেও আসামের বাসিন্দা কি না, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে রয়েছে পুলিশ।
পুলিশের সন্দেহ, জাহিরুল নারী পাচারকারী চক্রের সঙ্গে যুক্ত এবং পাচারের জন্যই ওই দুই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। জিআরপির তরফে ইতোমধ্যেই এনজিপি থানার হাতে অভিযুক্তকে তিনজনকেই তুলে দেওয়া হচ্ছে। সেখানেও কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদেও পর তাদের জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হয়।