জাতীয়

নওগাঁয় করোনায় ৮ মাসের শিশুর মৃত্যু

সিনিউজ ডেস্ক

নওগাঁয় করোনা শনাক্ত হওয়ার পরদিনই আট মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় জেলায় সাপাহার উপজেলায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়। এদিকে গতকাল সকাল আটটা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত জেলায় ৩৭২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনার বিপরীতে শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। আগের দিন শনাক্তের গড় হার ছিল ১৭ দশমিক ৮১ শতাংশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়ে আট মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া আদিয়ান নামের ওই শিশু নওগাঁর সাপাহার থানায় কর্মরত রায়হান উদ্দিন নামের এক পুলিশ সদস্যের সন্তান। গত মঙ্গলবার মা–বাবাসহ আদিয়ানের করোনা শনাক্ত হয়। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতেই শিশুটির মৃত্যু হয়। নওগাঁর ডেপুটি সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে ১৭৯টি নমুনার আরটি-পিসিআর টেস্টে ৫১ জনের করোনা পজিটিভ আসে। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া জেলায় ১৯৩টি নমুনার র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে ৪৩ জনের করোনা পজিটিভ আসে। শনাক্তের হার ২২ দশমিক ২৭ শতাংশ। নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়ামতপুর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৩৪ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার ১২ জন, সাপাহারে ১১ জন, পোরশায় ৬ জন, ধামইরহাটে ৮ জন, বদলগাছীতে ২ জন, মান্দায় ৫ জন, মহাদেবপুরে ৪ জন, রাণীনগরে ৩ জন এবং আত্রাই উপজেলায় ৮ জনের নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

গত রবি ও সোমবার উন্মুক্ত স্থানে ক্যাম্প করে পথচলতি মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাতে ১ হজার ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এই চিত্র কিছুটা উদ্বেগজনক।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ৩ জুন থেকে গতকাল পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী আংশিক লকডাউন শেষে আজ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত সাত দিনের বিশেষ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নওগাঁ শহরের তাজের মোড়, ব্রিজের মোড়, বাটার মোড় ও বাজার এলাকায় ঘুরে মানুষজনের মধ্যে বিধিনিষেধ মানার কোনো বালাই নেই। শহরের এসব এলাকায় যানবাহন চলাচল ছিল স্বাভাবিক সময়ের কাছাকাছি। স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে দোকানপাট খুলেছে। তবে বাজার এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেককেই তেমন একটা স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি। একটি অটোরিকশায় দুজন যাত্রী নিয়ে চলার নিদের্শনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।

নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজিয়া সুলতানা বলেন, মানুষজন স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি না, তা তাঁরা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। শতভাগ মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে নওগাঁ সদরে ৪টি এবং ১০টি উপজেলায় ২টি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছেন। স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা ও জরিমানা করা হচ্ছে।

জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ফোকাল পারসন ও ডেপুটি সিভিল সার্জন মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, জেলার করোনা পরিস্থিতি জানার জন্য এবং মানুষকে নমুনা দিতে আগ্রহী করতে বিনা মূল্যে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। গত রবি ও সোমবার উন্মুক্ত স্থানে ক্যাম্প করে পথচলতি মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাতে ১ হজার ৫৮০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এই চিত্র কিছুটা উদ্বেগজনক। বর্তমানে নওগাঁ সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিনা মূল্যে অ্যান্টিজেন টেস্ট করানো হচ্ছে।

Related Posts