জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেছেন, দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত সরকারী সেবা জনগণের দেরগোড়ায় পৌঁছে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সরকারের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দক্ষতা ও বিমাতাসুলভ আচরণের মাধ্যমে মানুষের কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত করতে যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হচ্ছে। যিনি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন তিনিই দক্ষ কর্মকর্তা। দেশের উন্নয়নে নতুন নতুন উদ্ভাবনের জন্য দক্ষতা অর্জন করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য কোন সেবা গ্রহীতাকে কষ্ট না দিয়ে এখন থেকে প্রত্যেককে আরও আন্তরিক হয়ে সৎ ও দক্ষতার সাথে সেবা দিতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দের সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ কামরুল হাসান এনডিসি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নতুন নতুন উদ্যোগ ও উদ্ভাবনগুলো তুলে ধরেন উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ বদিউল আলম। অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ দেলোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ সুমনী আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্ল্যাহ মারুফ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আবু রায়হান দোলনসহ বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকাল ১০টায় নগরীর চান্দগাঁও থানাধীর কালুরঘাটের অদূরে সমন্বিত অফিস এলাকা পরিদর্শন করেন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম। দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলায় কর্মরত প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম।
এদিকে সকাল ১০টায় নগরীর চান্দগাঁও থানাধীর কালুরঘাটের অদূরে সমন্বিত অফিস এলাকা পরিদর্শন শেষে পরীর পাহাড় প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম বলেন, পরীর পাহাড় একটি ঐতিহ্যবাহী পাহাড়। এ পাহাড় বহুকালের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তাই এটি সংরক্ষণ করতে হবে। এ পাহাড়কে সংরক্ষণের জন্য মূলত আমাদের এই সমন্বিত দফতর। ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন, পরীর পাহাড়ের সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য। শুধু পরীর পাহাড় নয়, দেশের সব জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি’।
তিনি আরও বলেন, প্রায় ৭৫ একর জমি নিয়ে আমরা সমন্বিত অফিস কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের চিন্তা ভাবনা করছি। ইতিমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত হয়েছেন। আমরা পরবর্তী পদ্ধতিগত দিকগুলো অনুসরণ করে এ বিষয়ে যা করণীয় সেটি করবো। আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে। উন্নত দেশের সরকারি কাজ কর্ম বা অফিসের কাজ কর্মের পরিবেশ ভালো করা একান্ত প্রয়োজন। সুন্দর অফিসে বসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করবেন। সেখান থেকে আমরা ভালো কাজ, গুণগত কাজ উপহার পাবো। এটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে আমরা যে সমস্ত অফিস করছি তার পরিবেশ, চারপাশের প্রতিবেশ, ভেতরের অবয়বে অনেক পরিবর্তন আসছে। এসব কিছুর চিন্ত করেই এই সমন্বিত দফতর। এখানে আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে, চিকিৎসা সেবা, ক্লাব ঘরের ব্যবস্থা থাকবে। যারা সেবা গ্রহীতা তারা আসবেন, কি কি সুবিধা প্রয়োজন, তাদের সেবা দেওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই এখানে থাকবে। সুবিধাভোগীদের সমস্ত বিষয় মাথায় রেখেই আমরা এ কার্যক্রম শুরু করবো। আমরা আপাতত ৭৫ একর নিয়ে এগুচ্ছি। পরে প্রয়োজন অনুসারে এটি বৃদ্ধি করা হবে। অন্য জমি অধিগ্রহণ করবো। সরকারের সকল বিভাগই প্রয়োজনীয়। কোনও একটি গুরুত্বপূর্ণ আবার কোনও একটি বিভাগ গুরুত্বহীন-এমনটি নয়। সকলের সমন্বিত প্রয়াসেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
কর্ণফুলী নদীর তীরে হওয়ায় কোনও প্রভাব পড়বে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ রকম প্রকল্পগুলো করার আগে আমরা পরিবেশ অধিদফতরের একটা ইমপ্যাক্ট এনালাইসিস করে নিবো। যদি পজেটিভ আসে তখন পরিবেশ অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদ্ধতিগতভাবে তাদের অনুমোদন নিয়ে নিবো।
সিনিয়র সচিব আলী আজম বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় রাজধানী। এ শহরের একটা আলাদা ঐতিহ্য আছে। সমন্বিত দফতরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য একটা ছোট অফিসের ব্যবস্থা আমরা রাখতে চাই। আমার দেখে খুব ভালো লাগছে। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাবনা রাখবো।###