চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্যা কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সদরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়েও সক্ষমতা বাড়াতে সরকার বিগত দুই বছরের ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছেন। জনগণের কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ডাক্তারদেরকে আরও আন্তরিক হতে হবে। তাহলে সরকারের ভিশন বাস্তবায়ন হবে। যাদের যে উপজেলায় পদায়ন করা হয়েছে তাদেরকে সেখানেই অবস্থান করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে হবে। রোগীদের বেকায়দায় ফেলে কর্মস্থল ত্যাগ করা যাবেনা। মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কর্মস্থলে কাজে লাগাতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন রোগীর চিকিৎসা সম্ভব না হলে তাকে ভালো ব্যবহার দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে। আজ ৮ মার্চ ২০২২ ইংরেজি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর সিনেমা প্যালেস সংলগ্ন লয়েল রোডের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম জেলায় ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে মেডিকেল অফিসার/ সহকারী সার্জন পদে যোগদানকৃত ১৪১ জন চিকিৎসকের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও জেলা স্বাস্থ্য তত্ত¡াবধায়ক সুজন বড়–য়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত চিকিৎসকগণের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান ও সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমওসিএস ডা.ওয়াজেদ চৌধুরী অভি। বক্তব্য রাখেন সন্ধীপ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. ফজলুল করিম, লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হানিফ, নবযোগদানকৃত মেডিকেল অফিসার ডা. সুদীপ কুমার চৌধুরী (বোয়ালখালী) ও ডা. জোয়াইরিয়া সুলতানা বন্যা (সীতাকুÐ)। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মোঃ শাখাওয়াত উল্লাহ। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ৮ মার্চ চট্টগ্রামে কোভিড সনাক্তের দুই বছর পূর্ণ হলো। বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্তে¡ও করোনা-ওমিক্রন মোকাবিলার পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে রাজধানী ঢাকার তুলনায় চট্টগ্রাম এখনো পর্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা নবযোগদানকৃত চিকিৎসকগণ সর্বোচ্চ বিসিএস ক্যাডারে ১ম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করে গর্বিত। নিজেকে ভালোবেসে এ দেশের মানুষকে ভালোবাসার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিতে পারলে স্বাস্থ্যসেবায় ঈর্ষনীয় সাফল্য আসবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরেই স্বাস্থ্যখাতে দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। কোভিডকালীন সময়ে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে রোগীর চিকিৎসা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক মূত্যুবরণ করেছেন। করোনা মহামারীর ক্রান্তিলগ্নে যখন রোগীরা আতঙ্কিত তখন চট্টগ্রামের ডাক্তারেরা বিএমএ’র মাধ্যমে অনলাইনে চিকিসা-সেবা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে কোভিড নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নবীন ডাক্তারেরা সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করলে সরকার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক। চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানকৃত চিকিৎসকগণ কর্মস্থলে অবস্থান করে সমন্বয়ের মাধ্যমে জনগণের চিকিৎসায় আন্তরিকভাবে কাজ করলে সরকারের উদ্দেশ্য সফল হবে। আগামী রমজানের পূর্বে বিএমএ’র পক্ষ থেকে নবীন ডাক্তারদেও সংবর্ধনা দেয়ার ঘোষনা দেন তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকের পাশাপাশি নবযোগদানকৃত ১৪১ জন চিকিৎসক আন্তরিকভাবে সেবা দিতে হবে। রোগীর প্রতি কোন ধরণের অবহেলা না করে সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। কাঙ্খিত চিকিসৎসাসেবা থেকে কেউ যেন বঞ্চিত না হয় সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তিনি নবীন চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশা দেন।
চট্টগ্রামে নবযোগদানকৃত ১৪১ জন চিকিৎসকের মধ্যে ফটিকছড়িতে ১০জন, মিরসরাইয়ে ৭জন, বাঁশখালীতে ৭জন, সাতকানিয়ায় ৭জন, সন্ধীপে ১১জন, লোহাগাড়ায় ৭জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৮জন, চন্দনাইশে ১৬জন, সীতাকুÐে ১১জন, বোয়ালখালীতে ১০জন, কর্ণফুলীতে ৭ জন, আনোয়ারায় ১০জন, রাউজানে ১১জন, পটিয়ায় ৮জন ও হাটহাজারীতে ১১জন। ###