নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কেউ স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলাফেরা করছে না। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ১০ শতাংশ। তবে শেষ সাতদিনে চট্টগ্রামে করোনা আবারও ভয়ংকর হয়ে ফণা তুলেছে। করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩৩৭ জনের মধ্যে। এর মধ্যে চট্টগ্রামে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে সোমবারের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত চার মাসের মধ্যে চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্ত হয়েছে এদিন। ১ হাজার ৯৪৮টি নমুনা পরীক্ষায় গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৭২ জন। মঙ্গলবার ২৩ মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট করোনা আক্রান্ত ৩৮ হাজার ২৩ জন। জেলায় করোনাতে সর্বমোট মৃত্যু হয়েছে ৩৮৩ জনের। তবে চলতি মার্চ মাসেই করোনায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ ) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৭টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়। গত ৭ দিনে চট্টগ্রামে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৩৭ জন। তার মধ্যে ১৭ মার্চ ১৮৩ জন, ১৮ মার্চ ১৫৯ জন, ১৯ মার্চ ২১২ ও ২০ মার্চ ২০০ জন, ২১ মার্চ ১১১, ২২ মার্চ ২০০, ২৩ মার্চ ২৭২ জন। চট্টগ্রামে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। আবারও করোনার প্রকোপ বাড়ার জন্য তিনি মূলত তিনটি কারণকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে করোনা রোগীর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হতে পারে, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। বিশেষত অনেকেই ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। সেটা অন্যদের মধ্যেও প্রভাব পড়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে টিকার দুই ডোজ শেষ হলে তা সম্পূর্ণ রূপে কাজ করবে। এর আগে পর্যন্ত সকলেই মাস্ক পড়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। তিনি বলেন, আমরা দেখছি জেলার কোথাও স্বাস্থ্যবিধি কেউই মানছে না। দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ব্যবহার করা, হাত ধোয়া, হ্যান্ডসেনিটাইজার ব্যবহার করা এসব এখন আর আগের মতো নেই। করোনা বাড়ার আরেকটি কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিলো কিন্তু গত বছর এমন দিনে। আবহাওয়ার একটা ব্যাপারও রয়েছে। এই সময়ে ফ্লু জনিত রোগ একটু বেশি ছড়ায়। চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ রোধে আবারও মাঠে নেমেছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনসহ পুলিশের সকল ইউনিট। তবে এখনও সবাই জনগণের সচেতনতার উপরই জোর দিচ্ছেন। তাই জরিমানার আগে নগরবাসীকে মাস্ক দিয়ে সতর্ক করেছেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান নিউজনাউকে বলেন, করোনা ঝুঁকি মোকাবিলায় ক্লাব, কমিউনিটি সেন্টার, কনভেনশন হল, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ও বিনোদন কেন্দ্রের পাশাপাশি সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জনসমাগম সীমিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এসব সর্বোচ্চ ১০০ জনের বেশি উপস্থিতি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রকাশ্য স্থানে সভা-সমাবেশ, ওরস, মিলাদ মাহফিল, মহোৎসব ও অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান আপাতত বন্ধ থাকবে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নগরের তিনটি প্রবেশ-মুখে চেক পোস্ট বসানো হচ্ছে। সেখানে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হবে। প্রথমে সর্তক করা হবে এবং এতে যদি কাজ না হয়, তাহলে কঠোর অবস্থানে যাবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।