কলকাতা প্রতিনিধি
করোনার বেহাল দশা। এবার করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ দেখে শ্মশান ছেড়ে পালিয়ে গেল ডোম। যার জেরে শ্মশানে জমে মৃতদেহর স্তুপ। ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি শহর জুড়ে। জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালে মারা যাওয়া করোনা রোগীর মৃতদেহ এতদিন দাহ করা হত জলপাইগুড়ি জেলার শাহুডাঙি শ্মশানে। সম্প্রতি শাহুডাঙি শ্মশানের বেহাল অবস্থার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এরপর নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। সমস্যা মেটাতে তড়িঘড়ি পৌরসভা ও অন্যান্য দফতরের সাথে বৈঠকে বসে জেলা প্রশাসন।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীদের দেহ জলপাইগুড়ি শহরে অবস্থিত মাসকলাইবাড়ি হিন্দু শ্মশানে গভীর রাতে দাহ করা হবে। এরপর শ্মশান স্যানিটাইজ করা হবে, তারপর থেকে আবার সারাদিন ধরে অন্যান্য মৃতদেহ গুলি দাহ করা হবে। এরপর আবার গভীর রাতে করোনা রোগীর মৃতদেহ দাহ করা হবে। এইভাবে পর্যায়ক্রমে চলতে থাকবে কাজ।
সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক বুধবার রাতে জলপাইগুড়ি শ্মশানে আনা হয় তিনটি মৃতদেহ। এরপরই হয় ছন্দ পতন। করোনা রোগীর মৃতদেহ আনা হয়েছে শুনে শ্মশান ছেড়ে পালায় দুই ডোম। এরপর তিনটি মৃতদেহের মধ্যে একটি মৃতদেহ সেখানে দাহ করা হলেও অন্য দুটি দেহ অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে।
এরপর ভোর রাত থেকে একের পর এক সাধারণভাবে মৃত্যু হওয়া মানুষের মৃতদেহ আসতে থাকে। শ্মশান স্যানিটাইজ না হবার ফলে ডোম আর আসেনি। তার ফলে ভিড় জমতে থাকে মৃতদেহের। নিজেদের উদ্যোগে পরিবারের লোকেরাই ডোমেদের কাকুতি মিনতি করে নিয়ে আসে। কিন্তু ডোমেরা সাফ জানিয়ে দেয় শ্মশানে পিপিই কিট, মাস্ক ইত্যাদি পড়ে আছে। তারা যেহেতু স্থায়ী কর্মী নয় তাই শ্মশান স্যানিটাইজ না হলে তারা দাহ করার কাজ শুরু করবেনা। ঘটনায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে শ্মশান যাত্রীদের মধ্যে।
খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে জলপাইগুড়ি পৌরসভা। এরপর অবশেষে বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্মশান স্যানিটাইজ করা হলে ফের শুরু হয় দাহ করার কাজ। ঘটনায় জলপাইগুড়ি পৌর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সৈকত চ্যাটার্জী বলেন, সরকারী সিদ্ধান্ত আমরা মানতে বাধ্য। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, গতকাল রাতে আমি নিজে দাহের সময় উপস্থিত ছিলাম। দাহ শেষ করে শ্মশান স্যানিটাইজ করা হয়েছে। আজ আরও একবার স্যানিটাইজ করে তারপর দাহ শুরু হবে। আর যেহেতু আজ প্রথম এই ধরনের রোগীর দেহ দাহ করা হল তাই সাময়িক ভাবে কিছু সমস্যা হয়েছে। এরপর থেকে এই সমস্যা মিটে যাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
