সনজিত কুমার শীল
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্বাধীনতার স্থপতি, গণতন্ত্র ও শান্তি আন্দোলনের পুরোধা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি।
‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তি দিবস উপলক্ষে আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে মিট দ্যা প্রেস নামে একটি প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।
করোনা পরিস্থিতির কারণে সবাই আসতে না পারায় আজ রবিবার (২৩ মে) জুম অ্যাপসের মাধ্যমে কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।এতে সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবু জাফর। প্রেস কনফারেন্সের শুরতে কেন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সে বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার মাধ্যমে বিষয়বস্তু তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। এরপর একটি বিশেষ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পরে রাষ্ট্রদূত তার মূল বক্তব্যে বলেন
বঙ্গবন্ধু শুধু বাঙালির নেতা ছিলেন না। তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত গণমানুষের নেতা। যেখানে মানবতার বিপর্যয় ঘটেছে, সেখানে মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এ জন্য বিশ্বজুড়ে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন এই মহান নেতা। জনগণের জন্য ভালোবাসা ছিল বঙ্গবন্ধুর কর্মকাণ্ডের প্রেরণা এবং মানুষের কল্যাণই ছিল তার কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য। এই মানবিক মূল্যবোধই তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল রাজনৈতিক সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে; যা প্রতিফলিত হয় তার বিভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শে, যেমন- গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও সমাজতন্ত্র। একটা কথা তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমার সারাজীবনের স্বপ্ন হচ্ছে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো।’ তার এই প্রত্যয় থেকেই আমরা বুঝতে পারি, সমাজের উন্নয়ন সম্পর্কে তার কত ব্যাপক এবং বহুমাত্রিক ধারণা ছিল।
এছাড়াও রাষ্ট্রদূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতার বিভিন্ন দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন বাস্তুহারা প্রায় ১২ লাখ নির্যাতিত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবতার যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন তা বর্তমান বিশ্বে বিরল। পাশাপাশি তিনি সরকারের ঐতিহাসিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রবাসীদের পাশে থাকার অনুরোধ জানান।
পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন রাষ্ট্রদূত। ২৩ শে মে ঢাকায় রমেশ সেন শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে এই পুরস্কার প্রদান করেন।
, জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকীতে শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই’র পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি। এ সময় তিনি আরো বলেন, এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান অর্থাৎ প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার। জাতির জন্য বিশাল গৌরবের বিষয়। তবে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তি বিষয়ে নেতৃবৃন্দ থেকে শুরু করে অনেকেই জানেনা। তাই ইতিহাস সবার কাছে পৌছে দিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের এ ধরনের আয়োজন বিশেষ গুরুত্ববহন করে। পাশাপাশি তিনি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে এ আয়োজনের জন্য দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মহোদয়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এসময় বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি সিরাজুল হক, সহ-সভাপতি মুহাম্মদ রফিক উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম, যুগ্ম সম্পাদক কামরুল হাসান জনি, সহ যুগ্ম সম্পাদক সনজিত কুমার শীল, সহ- সম্পাদক মুহাম্মদ মোদাচ্ছের শাহ, সহ- সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল আলীম সাইফুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল শাহীন, অর্থ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসমাইল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন রনি, প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ শাহজাহান ,দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও দূতাবাসের উপ রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের শ্রম কাউন্সিলর ফাতেমা জাহান, প্রবাস লামা, বাংলাভিশন এবং প্রবাসবার্তা সিনিয়র সাংবাদিক মিরাজ হোসেন গাজী,সাংবাদিক জাহাঙ্গীর কবির বাপ্পি সহ দূতাবাস ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
’উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়।(