নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য সাবেক যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর উদ্ভাবন করেছেন নতুন এক কার্যক্রম। এটি হচ্ছে করোনা প্রতিরোধক বুথ। এ বুথ চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশংসিত হয়েছে দেশজুড়েলে। এসব বুথে বিনামূল্যে মিলছে মাস্ক কিংবা স্যানিটাইজার।
হেলাল আকবর চৌধুরী নন্দনকানন ইউনিট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, এনায়েত বাজার ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ সভাপতি, ওমরগনি এমইএস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সিটি স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্য (নানক-আজম) এবং যুবলীগ কেন্দ্রীয় পরিষদের উপ অর্থ সম্পাদক (ফারুক-হারুন) পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বলেন, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে পাওয়ার একটি মাধ্যম এই করোনা প্রতিরোধক বুথ।
লাখ-কোটি মানুষকে হাতে হাতে মাস্ক দেওয়া সম্ভব নয়। তার জন্য প্রয়োজন একটি মাধ্যম, একটি টেবিল বা একটি বক্স।
সেই বক্স পদ্ধতির নাম হচ্ছে- করোনা প্রতিরোধক বুথ।
তিনি বলেন, করোনা প্রতিরোধক বুথ পিভিসি বোর্ডের মাধ্যমে তৈরি।
এটি এটিএম বুথের আদলে তৈরি করার কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া এটিএম বুথের আদলে করোনা প্রতিরোধক বুথ দেখলেই মানুষ যেন বুঝতে পারে এই বুথ থেকে বিনামূল্যে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার সেবা পাওয়া যায়। এটি মানুষের মাস্ক ব্যবহার ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং গণসচেতনতা বৃদ্ধির একটি কৌশল।
হেলাল আকবর চৌধুরী আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে এই করোনা প্রতিরোধক বুথ উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছি। যাতে জেলা-উপজেলায় জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্ব-উদ্যোগে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে পারে। পাশাপাশি ব্যক্তিবর্গ ও সংগঠন এই পদ্ধতি অনুসরণ করে কার্পেন্টার মিস্ত্রি দিয়ে করোনা প্রতিরোধক বুথ প্রস্তুত করতে পারে।
একটি করোনা প্রতিরোধক বুথ থেকে দৈনিক ৫০০ জন মানুষকে সেবা দিতে যে খরচ হবে, সেই খরচ কে বহন করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা-গ্রাম বা অলিগলিতে বসবাসরত একজন স্বাবলম্বী হৃদয়বান ব্যক্তি দৈনিক ৫০০ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতে দৈনিক ৭৪০ টাকা খরচ করতে পারবেন। প্রতিদিন আমরা অপ্রয়োজনীয় অনেক খরচ করি। সেটা না করে এই অর্থ মানবসেবায় ব্যয় করা যায়। কোনও দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সংগঠন যদি এই বুথ পরিচালনার দায়িত্ব নেয়, তবে স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত হবেই।
তার মতে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সুরক্ষা সচেতনতা তৈরিতে যে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে তারই আদলে যদি দেশের প্রতিটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে সুরক্ষা সচেতনতা নিশ্চিত করা যায়, তবে সুরক্ষার চাদরে আবদ্ধ করা যাবে পুরো দেশকে। দেশের সবকটি মার্কেটের মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো যৌথ উদ্যোগে সমিতির বিবিধ খরচের পাশাপাশি এই বুথগুলোর খরচ পরিচালনা করলে সুরক্ষিত হবে দেশ।
‘দেশের ৩০০ আসনের সংসদ সদস্যদের যদি নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় বিশেষ বরাদ্দ থাকে, তবে এই বুথ স্থাপনের কর্মসূচি হাতে নিয়ে নিজ সংসদীয় এলাকা করোনামুক্ত করা সম্ভব। যদি সরকারি বরাদ্দ না থাকে তবে নিজ উদ্যোগে এটা করলে বাংলাদেশ সুরক্ষা পাবে। যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান বা স্বনামধন্য কোম্পানি কিংবা রকমারি বিজ্ঞাপন প্রচারকারী সংস্থা নিজেদের বিজ্ঞাপন বাজেটে বিভিন্ন স্থানে বা নিজ এলাকা ও কর্মস্থলে বিজ্ঞাপনের আদলে এই বুথ পরিচালনা করলে মানুষ এটি ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করবে এবং করোনা ঠেকানো যাবে।’
‘দেশের সব মসজিদ পরিচালনা পরিষদ নিজেদের ফান্ড থেকে এই বুথ পরিচালনা করে সংক্রমণ ঠেকাতে পারবে। দেশের স্বনামধন্য ও সর্বস্তরের খাদ্যসামগ্রী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের শো-রুম ও কারখানায় প্রবেশপথে এই বুথ পরিচালনা করলে মানুষ ও ক্রেতা উভয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। শহর-গ্রামে সবখানেই আবাসিক ভবনে মালিক ও ফ্ল্যাট পরিচালনায় কমিটি ও আলাদা ফান্ড আছে, যা থেকে করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপন করলে সব ভবন সুরক্ষা পাবে। যানবাহন মালিক ও শ্রমিকদের কমিটি যৌথ উদ্যোগে বাসস্ট্যান্ডে করোনা প্রতিরোধক বুথ স্থাপনের মাধ্যমে করোনা থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারে। ’