চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য

সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিশ্ব যক্ষা দিবস পালিত

 

চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর বলেছেন, টিউবারকুলোসিস (টিবি) বা যক্ষা শুধু ফুসফুসের ব্যাধি নয়। এটি মস্তিস্ক থেকে শুরু করে ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি ও হাড়সহ শরীরের যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে। ফুসফুসে যক্ষার জীবাণু সংক্রমিত হলে টানা কয়েক সপ্তাহ কাশি ও কফের সাথে রক্ত যায়। আমাদের এমন কোন অঙ্গ নেই যেখানে যক্ষা হয়না। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সমন্বিত উদ্যোগের ফলে যক্ষা নির্মূল সম্ভব। যক্ষা হচ্ছে একটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি যেটা মাইক্রোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতার কারণে যক্ষা রোগীদের চিকিৎসায় দেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিকিৎসা সামগ্রী রয়েছে। পরিবারে যক্ষা রোগী থাকলে শিশুসহ অন্য সবাইকে চিকিৎসকের পরামর্শমতে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। যক্ষা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। আজ ২৪ মার্চ ২০২২ ইংরেজি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে আয়োজিত বিশ্ব যক্ষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘বিনিয়োগ করি যক্ষা নির্মূলে, জীবন বাচাই সবাই মিলে’। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচীর সহযোগিতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন অফিস ও সহযোগী সংস্থা সমূহ যৌথভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সভার পূর্বে বেলুন উড়িয়ে বিশ্ব যক্ষা দিবস-২০২২ এর শুভ উদ্বোধন করেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক। এসময় দিবসটি উপলক্ষে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি আন্দরকিল্লা হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে পূনঃরায় সিভিল সার্জন অফিসের সামনে এসে শেষ হয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাবি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার একটি অংশ জন্মগতভাবে যক্ষা রোগের জীবাণু বহন করে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের এ রোগের ঝুঁকি বেশি। পরিবেশ দূষণ, দরিদ্রতা, মাদকের আসক্তি ও অপুষ্টি যক্ষার হার বাড়ার অন্যতম কারণ। এ রোগের লক্ষণ দেখা দিলে ভয় না করে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। তাহলে নির্দিষ্ট সময়ে এ রোগ পুরোপুরি সেরে যাবে। সারাদেশে সরকারী হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক-কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার কারণে সাধারণ জনগণ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে। সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশাপাশি যক্ষা রোগীদের জন্যও সারাদেশে নির্ধারিত কিছু হাসপাতাল রয়েছে। সরকার আগামীতে জনবল আরও বৃদ্ধি করলে সকল সরকারী হাসপাতালে সেবার মান আরো দৃশ্যমান হবে। মাঠ পর্যায়ে জনগণের কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হলে সরকার ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ভাবমূর্তি আরো উজ্বল হবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও আইসিডিডিআরবি’র এসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এসটিবি) মোঃ নিজামুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাবি, বিভাগীয় টিবি এক্সপার্ট (এনটিপি) ডা. রাজীব পালিত, ফৌজদারহাটস্থ বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত¡াবধায়ক ডা. এস.এম নুরুল করিম ও নাটাব’র সভাপতি মোরশেদুল আলম কাদেরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের এমও ডিসি ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআরবি’র মেডিকেল অফিসার ডা. শাওন বড়–য়া ও চট্টগ্রাম জেলার ডিএসএমও (এনটিপি) ডা. প্রমিতি কর্মকার। বক্তব্য রাখেন আইআরডি’র মেডিকেল অফিসার ডা. গাজীউল হক পলাশ, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রোগ্রাম অর্গানাইজার গাজী মোঃ নূর হোসেন, মমতা’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার এস.এম আরিফ, নিস্কৃতির প্রোগ্রাম অফিসার মাহমুদুল ইসলাম অপু, উজ্বীবন’র প্রতিনিধি সাইয়েদা জামিলা সিদ্দিকা ও ব্র্যাক’র জেলা ব্যবস্থাপক মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া। ###

Related Posts