অপরাধ চট্টগ্রাম

সাবেক এমপি ফজলে করিম,হাসান মোহাম্মদ নাসিরসহ ১৭ জনের নামে হত্যা মামলা

 

সাত বছর আগে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরুকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রাউজানের নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মুহামদ জাবেদ (৩৫), নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহাম্মদ বাবুল মিয়া (৫২),কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও ইয়াবা কারবারি হাসসন মোহাম্মদ নাসির(৩৬)। এ হত্যা মামলায় মোট ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এ ছাড়া আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর।
মামলাটি দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী সুমি আক্তার।
ওই ছাত্রদল নেতাকে বাসা থেকে তুলে আনার কাজে নেতৃত্ব দেন পুলিশের এসআই মুহামদ জাবেদসহ একাধিক পুলিশ সদস্য, আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতা–কর্মীরা। এরপর রাতভর অত্যাচারের পর মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় নুরুল আলমকে।
ঘটনার দুই দিন পর আদালতে নুরুল আলমের স্ত্রী সুমি আকতার আমলা করলেও সেই সময় পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আসামিরা মামলার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে দেয়নি। এ কারণে নতুন করে মামলা করেন খুনের শিকার ছাত্রদল নেতার স্ত্রী।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, রাউজান নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এবং বর্তমানে চুয়েট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই জাবেদ, বাবুল মেম্বার, নাসের প্রকাশ টাইগার নাসের, লিটন, তৈয়ব, ফরিদ, মামুন, আবু জাফর রাশেদ, ইয়ার মোহাম্মদ, সেকান্দর, জসিম, খালেদ, বাবুল রব্বানি, হাসান মোহাম্মদ নাসির ও মোর্শেদকে।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ জনকে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ নগরের চকবাজার থানাধীন চন্দনপুরার পশ্চিম গলির মিন্নি মহল বাসায় রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে এবিএম ফজলে করিমের নির্দেশে রাউজান থানার এসআই জাবেদ অস্ত্র হাতে এসে বাসার দরজায় নক করেন। তখন নুরুর ভাগ্নে রাশেদুল ইসলাম বাসার প্রধান দরজা খুলে দেন। এ সময় বাসায় ঘুমন্ত নুরুল আলমকে বিছানা থেকে টেনে তুলে হাতে হাতকড়া পরিয়ে দেন এসআই জাবেদ।
তখন পরিবারের সদস্যদের পুলিশ জানায়, পরোয়ানা মূলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পরিবারের সদস্যরা পরোয়ানা দেখতে চাইলে পুলিশ দেখায়নি। বাসার তিনটি মোবাইল ফোনসহ নুরুকে বাইরে অপেক্ষমাণ একটি সাদা রঙয়ের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে নোয়াপাড়া কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাপড় দিয়ে চোখ, মুখ বেঁধে ও রশি দিয়ে দুই হাত বেঁধে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে তার মাথায় গুলি করে হত্যার পর রাউজন বাগোয়ান ইউনিয়নের খেলারঘাট কর্ণফুলী নদীর তীরে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন ৩০ মার্চ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ৩১ মার্চ ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফন করা হয়।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, ছাত্রদল নেতা নুরুলকে তাঁর থানার এলাকা থেকে ধরে নেওয়া হয়েছিল। যার কারণে মামলা তাঁর থানায় রেকর্ড হয়। তবে লাশ পাওয়া যায় রাউজান থানার এলাকায়। তাঁর থানা মামলা নিয়ে কাজ করবে। তবে রাউজান থানার সহযোগিতাও নেবে।

Related Posts