নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আট জঙ্গির ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আট আসামির সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যু- দেওয়ার পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে রায়ে। তাদের মধ্যে জিয়াসহ দুজন পলাতক।
বাংলাদেশে লেখক-প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে আক্রান্ত হন দীপন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের ছেলে দীপনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
দুই আসামিকে পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরুর এক বছর তিন মাসের মাথায় আলোচিত এ মামলার রায় হল।
৫৩ পৃষ্ঠার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, লেখক, ব্লগার ও প্রকাশকদের হত্যার অংশ হিসেবে অভিজিত রায়ের বই প্রকাশের জন্য জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা হয়।
“আসামিদের কারো ভূমিকা ছোট-বড় করে দেখার সুযোগ নেই। যারা বই প্রকাশের দায়ে মানুষ হত্যা করতে পারে, তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের শত্রু। ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যায় অংশগ্রহণকারীরা বেঁচে থাকলে আনসার আল ইসলামের বিচারের বাইরে থাকা সদস্যরা একই অপরাধ করতে উৎসাহী হবে।”
এ মামলার আট আসামি হলেন- বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ, মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের।
আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তারা সবাই
আদালতে দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান (বাঁয়ে)আদালতে দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান (বাঁয়ে)আদালতে উপস্থিত দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান রায় শুনে কেঁদে ফেলেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমি খুব অসুস্থ, কালকে আমার মামা মারা গেছেন। আমরা এই রায় নিয়ে সন্তুষ্ট। আজকে আমরা যে রায় পেয়েছি, এর জন্য সংশ্লিষ্ট যারা ছিলেন, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী খাইরুল ইসলাম লিটন ও এম নজরুল ইসলাম এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানান।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন গোলাম ছারোয়ার খান জাকির।