চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ রোগি শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো ছত্রাকজনিত বিরল রোগ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত এক নারীর খোঁজ মিলেছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আক্রান্ত হয়ে চারদিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই নারী। তার বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায়। আক্রান্ত এই নারীর স্বামী পাঁচদিন আগে করোনা পজেটিভ হয়ে মারা গেছেন।

জানা যায়, গত ২৫ জুন থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন ওই নারী। গত ৩  জুলাই তিনি কোভিড টেস্টে পজেটিভ হন। গত ১৫ জুলাই কোভিড নেগেটিভ হন। কিন্তু শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন ধারণা করেন। পরে চিকিৎসকরা এ রোগীকে এমপোটেরিসিন-বি ইনজেকশন প্রতিদিন ৫ ভায়াল করে মোট ১৪ দিন প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু হন্য হয়ে খুঁজেও এ ইনজেকশন পাওয়া যাচ্ছে না।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, ৫০ বছর বেশি বয়সী এ রোগী চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হই যে, তিনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। বর্তমানে চমেক হাসপাতালের চিকিৎসকদের অধীনে আছে। বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণে রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, রোগীকে ঢাকায় পাঠানো হবে কি না।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, বিরল এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই হাতেগোনা।

তবে সরকারিভাবে আপাতত এ ইনজেকশন যোগান দেওয়া সম্ভব নয়। এই রোগে যে ইনজেকশন প্রয়োজন তা এখনও দেশে নেই।

চিকিৎসকরা বলছেন, এটা খুব দুর্লভ একটা রোগ এবং চিকিৎসাও ব্যয়বহুল। খুব কাছাকাছি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্পর্শে না গেলে এই রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি কম। মূলত, কোভিড আক্রান্তদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা বেশি। তবে শুরু থেকেই এই রোগে চিকিৎসা করা জরুরি।

প্রসঙ্গত, এর আগে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চলতি বছরের গত ৮ মে ৪৫ বছর বয়সী এক রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর গত ২৩ মে ৬০ বছর বয়সী আরেক জনের শরীরেও ছাত্রাকজনিত রোগটি শনাক্ত হয়। তারা দুজনেই করোনা আক্রান্ত ছিলেন। পরে তারা করোনা মুক্ত হন।

জানা যায়, রোগটি বিরল। বিরল রোগের সংক্রমণে মৃত্যু হার ৫০ শতাংশের মতো। বাঁচার জন্য অনেককে চোখও ফেলে দিতে হয়। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার ১২-১৮ দিনের মাথায় এ রোগে আঘাত হানার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে মিউকরমাইকোসিসে ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি বলেও মনে করা হচ্ছে। মূলত করোনা আক্রান্ত রোগীকে মাত্রা না বুঝে স্টেরয়েড দিলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। যার ফলে রোগীর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।

Related Posts