সিনিউজ ডেস্ক
বেশ কিছুদিন ধরে দেশে করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী এবং এতে মৃত্যু বাড়ছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার ভারতীয় ধরন ছড়িয়ে পড়া নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আগামী ১৩ জুন উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী আজ রোববার বলেন, ‘যেহেতু বিধিনিষেধ বেড়েছে, তাই ঘোষিত সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সময় জানানো হবে।’
গত ২৬ মে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ১৩ জুন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ওপর। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মানুষের চলাচল ও সার্বিক কার্যক্রমে চলমান বিধিনিষেধ ১৬ জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে ১৩ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না।
এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এরপর দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। দীর্ঘ ছুটির কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ঘাটতি নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী যখনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক, চলতি বছরের পাশাপাশি আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিতে নেওয়া হবে। এ জন্য দুই বছরের জন্যই আলাদা সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচিও প্রণয়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে এ বছর সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে এসএসসি এবং ৮৪ দিন ক্লাস করিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১৫০ দিন এবং এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ১৮০ কর্মদিবসের ক্লাসের হিসাব করে এ পাঠ্যসূচি করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি অংশ অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমেও মূল্যায়ন করা হবে।
যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়, তাহলে প্রথম দিকে এ বছর ও আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস করানো হবে। প্রথম দিকে অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস হবে সপ্তাহে এক দিন। এরপর ক্রমাগতভাবে বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে পূর্ণাঙ্গভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলবে। তবে এ বছরের জেএসসি পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়নের চিন্তাভাবনা আছে।